একদিকে খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন অন্যদিকে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন কে অন্য খাতে প্রবাহিত করা এবং দেশে নাশকতা সৃষ্টির মাধ্যমে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ-পরিস্থিতি তৈরি এক ভয়ংকর খেলায় মেতেছে বিএনপি-জামায়াত। সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি-জামায়াতের তৎপরতা নিয়ে সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা এই রিপোর্ট প্রদান করেছে বলে জানা গেছে। সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে তারা বিএনপি-জামায়াতের এই অপতৎপরতা সম্পর্কে অবহিত আছেন এবং এই অপতৎপরতা যেন বিসৃত না হয় এ জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকার বদ্ধপরিকর। বিজয়ের মাস কে ঘিরে একটি ভয়ঙ্কর নাশকতার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে বিএনপি এবং জামায়াত। সেই নাশকতা পরিকল্পনার পটভূমি তৈরি করার জন্যই সারাদেশে একটি অস্থির পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের নামে শিক্ষার্থীদের মাঠে নামিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে জামায়াতের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। গত কিছুদিন ধরে ইসলামী ছাত্রশিবির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজ করছে। এর আগেও ছাত্র অধিকার পরিষদ নামে নুরের নেতৃত্বে যে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল সেই সংগঠনটি জামায়াত নিয়ন্ত্রিত বলে জানা গেছে। এই সংগঠনের অন্তত পাঁচজন শীর্ষস্থানীয় নেতা সরাসরি ছাত্র শিবিরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
মূলত জামাত এবং ছাত্রশিবিরের পৃষ্ঠপোষকতায় ছাত্র অধিকার পরিষদের নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে। জামায়াত গত পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে স্কুলে কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং স্কুলগুলোতে জামাতের নেটওয়ার্ক এখন বিস্তৃত হয়েছে। আর এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমেই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদেরকে রাস্তায় নামানো হচ্ছে এবং কোন অবস্থাতে যেনো তারা দাবি না মানে সে ব্যাপারে তাদেরকে উস্কানি দেয়া হচ্ছে। রামপুরা এলাকাটি দীর্ঘদিন ধরেই জামায়াত নিয়ন্ত্রিত এলাকা হিসেবে সুপরিচিত। এখানে জামায়াতের একটি বড় ধরনের কর্মী বাহিনী রয়েছে। রামপুরাতেই গত কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ হচ্ছে এবং দেখা যাচ্ছে যে এই সমস্ত শিক্ষার্থীরা যে কোনভাবেই হোক ছাত্র শিবিরের সঙ্গে সম্পৃক্ত। জামায়াত এবং বিএনপির মধ্যে একটি অলিখিত সমঝোতা হয়েছে। যেই সমঝোতার অংশ হিসেবে জামায়াত শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং অন্যান্য বিষয়ে আন্দোলনকে উস্কে দিবে আর বিএনপি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলনকে বেগবান করবে। ফলে সরকার দুই দিকে সামাল দিতে হিমশিম খাবে এর মধ্যেই দেশের বিভিন্ন স্থানে নাশকতার ঘটনা ঘটানো হবে। সম্প্রতি রামপুরায় একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর যেভাবে বাস পোড়ানো হয়েছে সেটি একটি পরিকল্পিত নাশকতা বলেই মনে করছেন সরকারের দায়িত্বশীল মহল। আর এ ধরনের নাশকতার ঘটনা আরো ঘটানোর পরিকল্পনাও বিএনপি-জামায়াতের হয়েছে।
এবার ডিসেম্বর মাস পালিত হচ্ছে অন্য অবয়বে। এই ডিসেম্বর আমাদের স্বাধীনতার ৫০ তম বার্ষিকী। এই বিজয়ের মাসে এমন একটি পরিস্থিতি বিএনপি এবং জামায়াত তৈরি করতে চায় যাতে বিজয়ের আবহ নষ্ট হয়ে যায়। আর সে কারণেই বিএনপি এবং জামায়াত তাদের সশস্ত্র গ্রুপকে আরো সক্রিয় করেছে বলেও জানা গেছে। এর পাশাপাশি সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা জঙ্গি-সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোকেও জামায়াত সঙ্ঘবদ্ধ করছে। রাজপথে শিক্ষার্থীদের লেলিয়ে দিয়ে এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের পাশাপাশি এই সংগঠনগুলোর গুপ্তহত্যাসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চাইছে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সৌজণ্যে: বাংলাইনসাইডার