ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

আ. লীগের ভোট চুরির দরকার হয় না, মন জয় করেই ভোট পায়: প্রধানমন্ত্রী

ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: মঙ্গলবার, জানুয়ারী ২, ২০২৪

আ. লীগের ভোট চুরির দরকার হয় না, মন জয় করেই ভোট পায়: প্রধানমন্ত্রী
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বন্ধ করার সাহস বিএনপির নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

রাজধানীর কলাবাগান মাঠে সোমবার বিকালে নির্বাচনি জনসভায় যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে বিকাল ৩টা ১৭ মিনিটে মঞ্চে উপস্থিত হন আওয়ামী লীগ সভাপতি। বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, তারা নির্বাচন বর্জন করছে। বর্জন করাটা খুবই স্বাভাবিক। ভোট চুরি করতে পারবে না, নির্বাচন করবে না। কারণ এরা ভোট চুরি করে অভ্যস্ত। চুরি করা ভোট দিয়েই তো তাদের সৃষ্টি। ক্ষমতা চুরি, ক্ষমতা দখল, ভোট চুরি- এছাড়া তো আর কিছু পারে না। এজন্যই তো নির্বাচন করতে চায় না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন নাকি তারা বানচাল করবে। মানুষের ভোটের অধিকার আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা অর্জন করেছি। সেই অধিকার কেড়ে নেবে, নির্বাচন বন্ধ করবে- এত সাহস তাদের নেই। তারা পারবে না।

বিএনপি নেতাদের দুর্নীতি ও অনিয়মের সমালোচনা করে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান নাকি ভাঙা সুটকেস রেখে গিয়েছিলেন। তা ভাঙা সুটকেস কি জাদুর বাক্স হয়ে গেল নাকি, যেখান থেকে টাকা বেরোয়? বক্তব্যের শুরুতেই শেখ হাসিনা বলেন, নতুন বছরে (২০২৪) পদার্পণ করলাম। সবাইকে ইংরেজি নববর্ষের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা মানুষের হৃদয় জয় করে তাদের ভোট পাই, চুরির প্রয়োজন হয় না। তারা (জিয়া-এরশাদ) ভোট চুরি করে, এটা আমার কথা না। হাইকোর্টের রায় আছে— জিয়ার ক্ষমতা দখল অবৈধ, এরশাদের ক্ষমতা দখল অবৈধ।

বঙ্গবন্ধুর দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ৭৫-এর পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল- তারা ক্ষমতায় এসেছিল অস্ত্র হাতে নিয়ে মানুষের ভাগ্য গড়েনি। এ দেশটাকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়। যে জয় বাংলা স্লোগানে দেশের মানুষ তাজা রক্ত দিয়েছিল, সেটিও নিষিদ্ধ করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সম্পূর্ণ জলাঞ্জলি দিয়ে দেয়।

শেখ হাসিনা বলেন, যেদিন বাংলাদেশে ফিরে আসি। আমার ফেলে রাখা আপনজনদের পাইনি। পেয়েছি হাজার হাজার মানুষ। সেদিন ঘোষণা দিয়েছিলাম, এই বাংলাদেশের মানুষই আমার পরিবার। তাদের মধ্যেই আমি খুঁজে পাব, বাবা-মা ভাইবোনের স্নেহ। হ্যাঁ, এটা পেয়েছি। একটা প্রত্যয় ছিল, সবার মুখে খাদ্য তুলে দেব। কেউ গৃহহীন ভূমিহীন থাকবে না। সবাইকে উন্নত জীবন দেব। ক্ষমতায় এসে সেই কাজ শুরুও করেছিলাম কিন্তু গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দেইনি বলে ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারিনি।

তিনি বলেন, দুর্নীতির কারণে ২০০৮ সালে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। আমরা ২৩৩ আসন পেয়ে সরকার গঠন করেছি। ২০১৩-১৪ সালে আগুনে মানুষ পুড়িয়েছে, কিন্তু নির্বাচন ঠেকাতে পারেনি। ২০১৮ সালে নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্য করেছে। তারেক জিয়া দেয় নমিনেশন, গুলশান থেকে ফখরুল দেয় নমিনেশন, পল্টন অফিস থেকে রিজভী দেয়। ওইভাবে নমিনেশন বিক্রির ফলে তাদের নির্বাচন ভেস্তে যায়, দোষ দেয় আমাদের ওপর।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপিই যুদ্ধাপরাধী জামায়াতকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দেয়, এ গুনই আছে তাদের। একমাত্র আওয়ামী লীগ দেশের ইতিহাসে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে দেশে জ্বালাও-পোড়াও ও অগ্নিসন্ত্রাস করেছে বিএনপি। 

সুশীল সমাজ ও বুদ্ধিজীবীদের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, অস্বাভাবিক সরকার হলে তাদের মূল্য বেড়ে যায়। আমরা নাকি তাদের মূল্য বুঝি না। কার কত মূল্য তা মেপে দেখতে হবে।

বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তারা নির্বাচনে হেরে যাবে বলে ভোট বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। বিদেশিদের ধরনা ধরছে। আন্দোলনের নামে নাশকতা করছে। নির্বাচন বন্ধ করবে এত সাহস তাদের নেই।

প্রধানমন্ত্রী সবাইকে ৭ জানুয়ারি ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সকাল সকাল ভোট দেবেন। কোনো ষড়যন্ত্র আমাদের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা দমিয়ে রাখতে পারবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, আপনার ভোট আপনি দেবেন, কেউ যেন ঠেকাতে না পারে। বিএনপির বিষয়ে সবসময় সজাগ থাকতে হবে। এরা মানুষের ক্ষতি করতে চায়। এরা মানুষকে ভোটদানে বিরত রাখতে চেষ্টা করছে।

বঙ্গবন্ধুর দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, ৭৫-এর পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল তারা ক্ষমতায় এসেছিল অস্ত্র হাতে নিয়ে মানুষের ভাগ্য গড়েনি। এ দেশটাকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়। যে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে দেশের মানুষ তাজা রক্ত দিয়েছিল, সেটিও নিষিদ্ধ করেছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের এই ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা করে দিয়েছি। আমরাই দেশের উন্নয়ন করেছি। 

শেখ হাসিনা এ সময় ঢাকার সংসদীয় আসনগুলোতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন। 

গত ২৮ ডিসেম্বর বিকালে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা সাবিরুল ইসলামের সই করা এক চিঠিতে এ জনসভার অনুমতি দেওয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়েছে- দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা প্রতিপালন এবং নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুসরণের শর্তে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ১ জানুয়ারি দুপুর ২টায় ধানমন্ডির কলাবাগান মাঠে নির্বাচনি জনসভা অনুষ্ঠানের বিষয়ে অনাপত্তি জ্ঞাপন করা হলো।