ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

দ্বৈত নাগরিকত্বে প্রার্থিতা হারালেন যারা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | আপডেট: শনিবার, ডিসেম্বর ১৬, ২০২৩

দ্বৈত নাগরিকত্বে প্রার্থিতা হারালেন যারা
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দুজনসহ মোট তিন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আপিল শুনানিতে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বরিশাল-৪ আসনের শাম্মী আহমেদ ও ফরিদপুর-৩ আসনের শামীম হক এবং বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাদিক আবদুল্লাহর প্রার্থিতা বাতিল করেছে সংস্থাটি। 

তবে ফরিদপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল কাদের আজাদের (একে আজাদ) বিরুদ্ধে দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগ এনে করা আপিল খারিজ করে দিয়েছে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন।

শুক্রবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আপিল শুনানিতে এসব রায় দেয় ইসি। আপিল শুনানিতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। উপস্থিত ছিলেন অন্য চার কমিশনারসহ ইসি সচিব।

বরিশাল-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী শাম্মী আহমেদ মনোনয়নপত্রে তার দ্বৈত নাগরিকত্ব (অস্ট্রেলিয়া) সংক্রান্ত তথ্য গোপন করেছেন মর্মে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করে তার প্রার্থিতা বাতিল চেয়েছিলেন ওই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী পংকজ দেবনাথ। অভিযোগ পেয়ে শাম্মী আহমেদের যাচাই-বাছাই শেষে মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। 

রিটার্নিং কর্মকর্তার আদেশের বিরুদ্ধে ইসিতে আপিল করেন শাম্মী আহমেদ। পরে তার দ্বৈত নাগরিকত্ব সংক্রান্ত তথ্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ঢাকার অস্ট্রেলিয়া দূতাবাসের সহায়তায় সংগ্রহের জন্য নির্দেশনা দেয় ইসি। এরই পরিপ্রেক্ষিতেই দ্বৈত নাগরিকত্বের প্রমাণ পাওয়ায় শাম্মী আহমেদের মনোনয়ন বাতিল করে কমিশন।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া ফরিদপুর-৩ আসনের প্রার্থী শামীম হক হলনামায় তথ্য গোপন করায় তার মনোনয়ন বাতিল চেয়ে ইসিতে আপিল করেছিলেন একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ। মনোনয়নপত্রে তার দ্বৈত নাগরিকত্ব (নেদারল্যান্ডস) সংক্রান্ত তথ্য গোপন করেছেন মর্মে অভিযোগ করে প্রার্থিতা বাতিল চান স্বতন্ত্র প্রার্থী। তার এই আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে শামীম হকের নেদারল্যান্ডসের দ্বৈত নাগরিকত্ব সম্পর্কিত তথ্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ঢাকার নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের সহায়তায় সংগ্রহের জন্য নির্দেশনা দিয়েছিল কমিশন। পরে আওয়ামী লীগের এই প্রার্থীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য হওয়ায় আপিলে তার মনোনয়ন বাতিল করল ইসি।

এদিকে প্রথমে নৌকার প্রার্থী শামীম হকের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে ইসিতে আবেদন করেছিলেন এ কে আজাদ। পরে তার বিরুদ্ধে পাল্টা প্রার্থিতা বাতিলের আবেদন করেন শামীম হক। হলফনামায় ‘মিথ্যা তথ্য’ দেওয়ার অভিযোগ তুলে একে আজাদের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে ইসিতে আপিল করেন তিনি। তার আপিলের ফলে একে আজাদের দ্বৈত নাগরিকত্বের তথ্য দিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয় কমিশন। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহের জন্য বলেছিল সংস্থাটি।  

শুনানি শেষে বের হয়ে একে আজাদের পক্ষের আইনজীবী বলেন, ফরিদপুর-৩ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শামীম হকের আইনজীবী একটি অভিযোগ দাখিল করেন যে, একে আজাদ আমেরিকার নাগরিক। আজ কমিশন শুনানিতে শামীম হকের আইনজীবীর কাছে জানতে চায় তাদের সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ আছে কিনা। জবাবে তারা জানান, তাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। পরে তথ্য প্রমাণ না থাকায় একে আজাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ খারিজ করে দেয় ইসি।

বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর মনোনয়নপত্র বাতিল চেয়ে আপিল করেন ওই আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাহিদ ফারুক শামীম। সাদিকের বিরুদ্ধেও দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগ আনা হয়। পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমের পক্ষে তার মনোনয়নপত্রের সমর্থনকারী কে বি এস আহমেদ ইসিতে এই আবেদন করেন। 

আপিলে সাদিক আবদুল্লাহকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ভোটার হিসেবে উল্লেখ করে সেখানকার ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া তথ্যও যুক্ত করা হয়। আপিল শুনানি শেষে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাদিক আব্দুল্লাহর প্রার্থিতা বাতিল করে রায় দেয় ইসি। তবে প্রার্থিতা ফিরে পেতে সাদিক আবদুল্লাহ হাইকোর্টে আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী।