ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

খালেদা জিয়ার ক্ষমা চাওয়া নিয়ে বিভক্ত পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: রবিবার, নভেম্বর ২৮, ২০২১

খালেদা জিয়ার ক্ষমা চাওয়া নিয়ে বিভক্ত পরিবার

বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির পথ বাতলে দিয়েছে সরকার। প্রকাশ্যে যদিও বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে অন্যদিকে সরকার বলছে বেগম খালেদা জিয়ার আইনের আওতায় বিদেশি নেয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই কিন্তু বাস্তবতা হলো ভিন্ন। পর্দার আড়ালে সরকার এবং বিএনপির মধ্যে বিশেষ করে বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের মধ্যে খালেদা জিয়াকে বিদেশি নেয়ার জন্য এখনো চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সরকারের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে সরকার বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারকে জানিয়ে দিয়েছে যে বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার একমাত্র পথ খোলা রয়েছে আর সেই পথটি হল রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করা। বর্তমানে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১এ খালেদা জিয়া জামিনে আছেন। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা হলো সরকারের নির্বাহী আদেশে জামিন। আইনমন্ত্রী বলেছেন, যেহেতু এই ধারাটি ইতিমধ্যে প্রয়োগ করা হয়েছে কাজেই এই ধারায় তাকে নতুন করে জামিন দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ এই ধারার শুধুমাত্র একবারই প্রয়োগ করা যায়। আইনমন্ত্রী এটাও জানিয়েছেন যে বেগম খালেদা জিয়া যদি বিদেশে যাওয়ার জন্য আবেদন করেন তাহলে সেক্ষেত্রে তাকে আবার আত্মসমর্পণ করতে হবে জেলে যেতে হবে এবং সেখান থেকেই তিনি নতুন করে আবেদন করতে পারবেন সেটা বিবেচনা করা যাবে। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা তাতে এটি সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছে সরকার, সরকারও ধরনের ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না। এটি আইনমন্ত্রী আইনের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন বলেই সরকারের দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন। এরকম পরিস্থিতিতে বেগম খালেদা জিয়া কি করবেন।

 

সরকারের কেউ কেউ মনে করছেন বেগম খালেদা জিয়ার যদি কিছু হয় তাহলে পুরো ব্যাপারটা সরকারের ঘাড়ে এসে চড়তে পারে এবং সরকারের অবহেলার কারণে বা সরকার বিদেশে যেতে দেয়নি বলেই বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু হয়েছে এমন একটি ধারণা চাপিয়ে দেওয়া হতে পারে এবং জনগণকে এরকম বুঝানোর চেষ্টা করা হতে পারে। তাই সরকারও বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার একটি সম্ভাব্য পথ খুঁজতে চাইছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। আর ক্ষেত্রে সংবিধানেই সমাধান রয়েছে বলে জানা গেছে। সংবিধান অনুযায়ী কোন দণ্ডিত ব্যক্তি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা আবেদন করতে পারেন এবং রাষ্ট্রপতির এটি একক সাংবিধানিক ক্ষমতা। রাষ্ট্রপতি চাইলে যেকোনো দণ্ডিত ব্যক্তিকে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারেন। আর বেগম খালেদা জিয়া যদি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত হন তাহলে তার জন্য বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে আর কোনো বাধা থাকবে না। কিন্তু সমস্যা হল যে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনার বিষয়টি বিষয়টি অত্যন্ত বিতর্কিত। এর ফলে বেগম জিয়াকে তার অপরাধ স্বীকার করতে হবে এবং অপরাধ মেনে নিতে হবে। অর্থাৎ তাকে বলতে হবে যে তিনি দুর্নীতি করেছেন এবং আদালত যে রায় দিয়েছেন তা যথাযথ এখন তিনি অনুতপ্ত এবং ক্ষমা প্রার্থনা করেন। কিন্তু এটি বেগম জিয়া চাইবেন কিনা নিয়ে বেগম জিয়ার পরিবারের মধ্যেই আলোচনা হয়েছে।

 

গতকাল এবং আজ বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের চারজন সদস্য নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এদের মধ্যে রয়েছেন বেগম খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান, পুত্রবধূ জোবায়দা রহমান, প্রয়াত কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান এবং খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার। তাদের আলোচনায় শামীম এস্কান্দার বলেছেন, এখন বেগম খালেদা জিয়াকে যেকোনো মূল্যে বিদেশে পাঠানোর জন্য তিনি ক্ষমা প্রার্থনা আবেদন করবেন এবং নিয়ে তার সঙ্গে সরকারের কথা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। কিন্তু তারেক জিয়া নিয়ে তার তীব্র বিরোধিতা করছেন। তিনি মনে করেন যে বেগম খালেদা জিয়া যদি ধরনের ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন করেন তাহলে সেটি হবে বিএনপির রাজনীতির জন্য একটি কুঠারাঘাত। তবে শামীম এস্কান্দার মনে করেন যে এখন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতি বা ভাবমূর্তি এগুলো দেখার সুযোগ নেই। এখন তার জীবন রক্ষাটাই মূল বিষয় আর কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে যেকোনো প্রকারে এমনকি ক্ষমা চেয়ে হলে বিদেশে পাঠানো উচিত বলে জানা গেছে। কিন্তু তারেক জিয়া ব্যাপারে তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন। আর সেই কারণেই এখন বেগম জিয়া ক্ষমা চাইবেন কিনা সেই বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় নি। বেগম খালেদা জিয়ার পরিবারের একজন সদস্য বলেছেন, বেগম জিয়া এখন নিজে কোন সিদ্ধান্ত দেওয়ার অবস্থায় নাই, কাজেই পরিবারকেই এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং আমরা খুব শিগ্রই এই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবো।

 

সৌজণ্যে: বাংলাইনসাইডার