‘কোনো স্বতন্ত্র মতন্ত্র আমরা চিনি না, মাইরের ওপর কোনো ওষুধ নাই’-এমন বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসানুল ইসলাম রিমনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোকন চন্দ্র সরকার।
তিনি বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে নরসিংদী মডেল থানায় রিমনের নামে বৃহস্পতিবার রাতে মামলা করে নির্বাচন কমিশন। এ মামলায় রিমনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রবিউল আলম বলেন, নিবার্চনী আচরণবিধি ভঙ্গ করে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে নরসিংদী সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা ওমর ফারুক বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) রাতে সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
তিনি আরো বলেন, এমন বক্তব্য হুমকি-ধমকি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করে। নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনের এমন ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।
এছাড়া বৃহস্পতিবার রাতে রিমনকে শোকজ নোটিশ দেন নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির সদস্য নরসিংদীর যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ নাহিদুর রহমান নাহিদ। নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নরসিংদী-১ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম হিরুর পক্ষে নরসিংদী ক্লাব লিমিটেড আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এমন বক্তব্য দেন রিমন।
সভায় রিমন আরও বলেছিলেন, ‘ছাত্রলীগের কোনো পোলাপান স্বতন্ত্ররে মানতো না। স্বতন্ত্ররে কেমনে পিডাইতে অয়, হে অই দেহাইসে, হেরে আমরা এমনেই পিডামু। এ শহরের, এ সদরের কোনো এলাকায় তাদের (স্বতন্ত্র প্রার্থী) কোনো জায়গা দেওয়া যাবে না। তারা নৌকার বিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী, তারা দেশবিরোধী। ’
রিমনের এমন বক্তব্য মুহূর্তেই ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়, গত ২৯ নভেম্বর বুধবার দুপুরে নরসিংদী ক্লাবে অনুষ্ঠিত নরসিংদী-১–এর আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের মতবিনিময় সভায় নির্ধারিত ভাষণে আহসানুল বলেছেন, ‘ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা কোনো স্বতন্ত্র মতন্ত্র চিনে না। মাইরের ওপর কোনো ওষুধ নাই। পোলাপাইনও জানে কীভাবে পিটাইতে হয়। কোনো স্বতন্ত্র মতন্ত্র ছাত্রলীগ মানে না। স্বতন্ত্র প্রার্থীকে কীভাবে পিটাইতে হয় হে ওই আমগরে শিখাইছে, হেরে আমরা হেমনেই পিডাইমু। এই আসনের কোনো এলাকায় তাঁদের জায়গা দেওয়া যাবে না। ’ এই বক্তব্য প্রথম আলোর পত্রিকার অনলাইনে প্রকাশিত হয়। এমন বক্তব্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২ এবং সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালার লঙ্ঘন। আইন ভঙ্গের কারণে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, নোটিশপ্রাপ্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।