নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: শুক্রবার, নভেম্বর ২৬, ২০২১
নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে দেশের
তরুণ-যুবসমাজকে সচেতন ও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। পাশাপাশি নির্যাতনকারীদের রাজনৈতিক,
সামাজিক ও প্রশাসনিক আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া বন্ধ করতে হবে। যৌতুক, পারিবারিক সহিংসতা
ও বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে গড়ে তুলতে হবে প্রতিরোধ। নারী নির্যাতনের সংস্কৃতিকে সমর্থন
করে, এমন পিতৃতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ নিরোধের লক্ষ্যে জাতীয় নীতি ও কর্মপরিকল্পনা
গ্রহণ জরুরী বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফরিদা পারভীন।
নারী ও শিশুর প্রতি যে কোনো ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ উল্ল্যেখ করে তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা‘র নেতৃত্বে
‘নারী ও শিশু নির্যাতন এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধের লক্ষ্যে প্রচলিত সকল আইনের আওতায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আন্তরিকতা, দক্ষতা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। নারী ও শিশু নির্যাতনের মতো ঘৃণ্য অপরাধ প্রতিরোধ করে এ ধরনের অপরাধীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে ব্যাপক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশে যখন কোন ধর্ষণের
মতো নিষ্ঠুর কর্মকান্ডের শাস্তি স্বরুপ একজন ধর্ষকের জন্য প্রচলিত আইন ছিলো যাবৎজীবন
কারাদন্ড। সেটি কিন্তু বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার সংশোধন করে ২০২০ সালে ধর্ষকের সর্বোচ্চ
শাস্তি মৃত্যুদন্ড করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বহুলপ্রচারিত ফ্রিডমবাংলানিউজে
দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তাব্য করেন।
তিনি বলেন, নারীর প্রতি সমাজের
পুরুষের বিশেষ করে তরুণ সমাজের যে প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গি এবং মানসিকতা, তা থেকে আধুনিক
যুক্তিযুক্ত দৃষ্টিভঙ্গি অর্জনের জন্য সচেতনতার প্রয়োজন। সমাজের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীসমাজকে
সব ক্ষেত্রে সম–অংশগ্রহণের
সুযোগ করে না দিলে এবং নারী ও কণ্যাশিশুদের বিরুদ্ধে চলমান সহিংসতা বন্ধ না হলে সমাজ
ও রাষ্ট্র এগিয়ে যেতে পারবে না। নারীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি, এসিড সন্ত্রাস, যৌতুকের
দাবি ও পারিবারিক সহিংসতা—এসব প্রতিরোধে যেসব আইন রয়েছে,
সেগুলোর বাস্তব প্রয়োগও জরুরী বলে মন্তব্য করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ওই নারী নেত্রী।
বে-আইনি ফতোয়ার বিরুদ্ধে সামাজিক
প্রতিরোধ গড়ে তোলা, কিশোরী নির্যাতন বন্ধে নীরবতা ভেঙে এগিয়ে আসা ও নারী নির্যাতন
প্রতিরোধ এবং নিমূর্লে কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সচেতনতা মূলক কর্মসূচিতে নারী ও
কন্যাশিশুদের পাশাপাশি পুরুষসমাজকে যুক্ত করে সাধারণ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক বিভিন্ন
কর্মসূচি গ্রহণ করতে সোস্যাল ওর্য়াকারদের প্রতি আহব্বান জানান।
ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার এবং
ওসিসির কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করতে হবে। পরিবার থেকে নারী নির্যাতনবিরোধী সংস্কৃতি
গড়ে তুলতে হবে। সর্বোপরি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নারীর প্রতি সমাজের পুরুষ বিশেষ
করে তরুণ সমাজের যে প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গি ও মানসিকতা থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে।
নারীপুরুষের সমান অধিকারা প্রতিষ্ঠা
ও নারীসমাজকে সব ক্ষেত্রে সম–অংশগ্রহণের মধ্যেদিয়েই নারীর
প্রতি যে সহিংসতা হচ্ছে সেটি কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। সরকারের পাশাপাশি সকলের অংশগ্রহন
নারীদের জন্য একটি সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারব এবং সহিংসতামুক্ত একটি সোনার বাংলাদেশ
প্রতিষ্ঠা করতে পারব।
ফ্রিডমবাংলানিউজ/খাইরুল