নিজস্ব প্রতিবেদক |
আপডেট:
বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২৫, ২০২১
নীলফামারী
কিশোরগঞ্জ উপজেলায় আগাম জাতের আলু
ক্ষেত থেকে তুলতে শুরু
করছেন চাষিরা। ফলন ভালো হওয়ায়
আগেভাগে তুলে বাজারে চড়া
দামে বিক্রি করছেন তারা। আগাম আলু ঢাকা,
চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা ছাড়াও বিভাগীয় শহরগুলোতে সরবরাহ করা হচ্ছে। চলতি
বছর আগাম আলু উৎপাদনে
অতীতের রেকর্ড ভাঙার আশা করছে জেলা
কৃষি বিভাগ।
বুধবার
(২৪ নভেম্বর) সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা যায়,
খুচরা বাজারে প্রকারভেদে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে
৭০-৮০ টাকা। নতুন
আলু পেয়ে আগ্রহ সহকারে
কিনছেন ক্রেতারা। পাশাপাশি ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে
পাইকাররা নীলফামারী এসে গ্রামগঞ্জে ঘুরে
আলু কিনে ট্রাক ভরে
নিয়ে যাচ্ছেন।
উপজেলার
বাহাগিলী ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি গ্রামের আলু চাষি আনোয়ারুল
ইসলাম, কবির হোসেন ও
কালাম হোসেন আগাম আলু চাষ
করেছেন। তাদের ক্ষেতে ভালো ফলন হয়েছে।
৭০-৮০ টাকা কেজিতে
আলু বিক্রি করছেন তারা।
ইউনিয়নের
হাড়িবেচাপাড়ার চাষি কবির হোসেন
বলেন, দেড় বিঘা জমির
আগাম আলু তুলেছি। ভালো
ও বড় আলুর কেজি
৮০ টাকা আর একটু
ছোট আলুর কেজি ৭০
টাকা বিক্রি করছি।
একই
এলাকার চাষি আনোয়ারুল ইসলাম
বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও ১৫
বিঘা জমিতে আলু লাগিয়েছি। এর
মধ্যে চার বিঘায় লাগিয়েছি
আগাম জাতের আলু। ৬১ দিনের
মাথায় আগাম আলু তুললাম।
চার বিঘায় ২৫ বস্তা আলু
হয়েছে। এখনও বিক্রি করিনি।
ভালো দাম পেলে ক্ষতি
কাটিয়ে উঠে ঘুরে দাঁড়াতে
পারবো।
আরেক
চাষি কালাম হোসেন বলেন, তিন বিঘা জমিতে
আলু লাগিয়েছি ভালো দামের আশায়।
জমি উঁচুতে হওয়ায় আশ্বিন, কার্তিক মাসের বৃষ্টিতে আলুর ক্ষতি হয়নি।
এখন আলু তুলছি। বিঘায়
(৫০ কেজির বস্তা) ১০-১২ বস্তা
হতে পারে। আশা করি, এতে
খরচ বাদে দ্বিগুণ লাভ
হবে।
জেলা
শহরের কিচেন মার্কেটের আলুর খুচরা বিক্রেতা
ইলিয়াস আহমেদ বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে এ বছর বাজারে
নতুন আলু আমদানি হয়েছে
দেরিতে। বাজারে দাম ভালো। আলু
চাষিরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন।
স্থানীয়
চাষিরা জানিয়েছেন, সপ্তাহখানেক পর কিশোরগঞ্জের নয়
ইউনিয়নের সব জমির আলু
তোলা হবে। তবে বাজার
দর ঠিক থাকলে আলু
চাষিরা লাভবান হবেন। আলু তোলার পর
ওই জমিতে গম, ভুট্টা, মিষ্টি
কুমড়া, কাঁচা মরিচ ও শীতকালীন
শাক-সবজি চাষ করা
হবে। এতে চাষিরা বিনা
সারে পরবর্তী ফসল তুলতে পারবেন।
বর্তমানে
বাজারে নতুন আলু আসছে
জেলা সদরের কচুকাটা, সোনারায় বাবড়িঝাড়, কিশোরগঞ্জ উপজেলার পুটিমারী, উত্তর দুরাকুটি ও নিতাই ইউনিয়ন
থেকে। এসব আলুর কেজি
৭০-৮০ টাকা দরে
বিক্রি হচ্ছে।
জেলা
কৃষি বিভাগ জানায়, এবার জেলায় আগাম
জাতের আলু আবাদ হয়েছে
১০ হাজার হেক্টর জমিতে। ওইসব জমির আগাম
আলু তুলে সেখানে আবার
আলু চাষ করবেন চাষিরা।
এবার জেলায় ২২ হাজার হেক্টর
জমিতে আলু চাষ হচ্ছে।
এর মধ্যে আগাম জাতের আলু
চাষ হয়েছে ১০ হাজার হেক্টর
জমিতে।
কিশোরগঞ্জ
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.
হাবিবুর রহমান বলেন, চলতি বছর ছয়
হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে
আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবহাওয়া
অনুকূলে থাকায় আলুর বাম্পার ফলনের
আশা করা হচ্ছে। চাষিরা
ভালো দাম পেলে আগামীতে
আগাম আলু চাষে উৎসাহিত
হবেন। মাঠপর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি
কর্মকর্তারা প্রতিনিয়ত চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছেন।
জেলা
কৃষি কর্মকর্তা মো. আবু বক্কর
সিদ্দিক বলেন, কিশোরগঞ্জ উপজেলায় এবার ছয় হাজার
৫০০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলু
চাষাবাদ হয়েছে। ৫৫-৬০ দিনের
মাথায় আলু তুলতে শুরু
করেছেন চাষিরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলুর বাম্পার ফলনের
আশা করছি। চাষিরা ভালো দাম পেলে
আগামীতে আরও বেশি আগাম
আলু চাষ হবে। চলতি
বছর আগাম আলু উৎপাদনে
অতীতের রেকর্ড ভাঙবে।