লাখ লাখ ফিলিস্তিনিদের মতো আমিও আরেকটি গণমৃত্যু এবং ধ্বংসের সবচেয়ে খারাপ দুঃস্বপ্নের মধ্য দিয়ে বসবাস করছি। কিছু দিন আগে আল-আহলি আল আরব হাসপাতালে বোমা হামলা হয়েছিল। যেখানে শত শত শিশু, নারী ও পুরুষের নিহতের খবর পাওয়া যায়। জানি না আবার কখন আমাদের নিরীহ মানুষের ওপর নির্বিচারে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড ও হত্যাযজ্ঞ চালানো হবে। এসব মানুষ নিরাপদ আশ্রয় ভেবে ওই হাসপাতাল বেছে নিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো লাভ হলো না। কয়েক ঘণ্টা আগে, আমার বন্ধু মোহাম্মদ মোখিমার, তার স্ত্রী সাফা এবং তাদের ৩ মাস বয়সি শিশু ইলিয়ানার মৃত্যুর খবর আমার কাছে আসে। ইসরাইলের নির্দেশে গাজার দক্ষিণাঞ্চলে অন্য পরিবারের সঙ্গে সরিয়ে নেওয়ার পর তাদের হত্যা করা হয়।
ইসরাইলের চালানো ওই বিমান হামলায় তারাসহ আরও ৭০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আমার এ মুহূর্তের অনুভূতি শুধু একটি শব্দে কিছুটা বোঝাতে পারব। কাহর (আরবি শব্দ)। যার অর্থ অভিশাপ। এটা শুধু বেদনা নয়, নিদারুণ যন্ত্রণা আর ক্ষোভের অনুভূতি। কাহর ২০০৮, ২০০৯, ২০১২, ২০১৪, ২০২০ এবং ২০২১ সালে আমার পরিবার, বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশী এবং সহকর্মী ফিলিস্তিনিদের হত্যা, পঙ্গু ও বিধ্বস্ত করে গাজায় ইসরাইলের চালানো প্রতিটি আক্রমণকে সংজ্ঞায়িত করে।
৭৫ বছরের বেশি সময় ধরে জাতিগত নিধন, গণহারে হত্যা, অবিচার, দমন-পীড়ন, উপনিবেশ স্থাপন, দখলদারি এবং জাতিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে পুঞ্জীভূত এক অনুভূতি। ফিলিস্তিনের প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম এই অনুভূতি ছড়িয়ে আছে। মিশে আছে রক্তের সঙ্গে। এটি এমন এক অনুভূতি যাকে সঙ্গী করে আমাদের পুরো জীবন কাটিয়ে দিতে হয়। এখনো সময় আছে। ইতিহাসের ভুল জায়গায় অবস্থানের লজ্জা থেকে নিজেদের বাঁচান। বেল হুকস (মার্কিন লেখক) বলেছেন, ‘সংহতি প্রকাশ করেও সক্রিয় থাকা যায়।’
প্যালেস্টাইন স্পিকস ইন জার্মানি এবং সুমুদ-দ্য ফিনিশ প্যালেস্টাইন নেটওয়ার্কের সহপ্রতিষ্ঠাতা মাজেদ আবুসালামা। থাকেন জার্মানির বার্লিনে। ইসরাইলের নির্বিচার হামলায় বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনিদের অবস্থা নিয়ে ইউরোপবাসীর উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন। চিঠিটি বৃহস্পতিবার আলজাজিরার অনলাইন মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।