ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, জুলাই ৫, ২০২৪ |

EN

পাপন-নান্নুদের ব্যর্থতার ক্যান্সার থেকে ক্রিকেট সেরে উঠবে কবে?

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৩, ২০২১

পাপন-নান্নুদের ব্যর্থতার ক্যান্সার থেকে ক্রিকেট সেরে উঠবে কবে?

বাংলাদেশের ক্রিকেট তাকিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে। সদ্য সমাপ্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং চলমান পাকিস্তান সিরিজ থেকে ভেসে আসা হাহাকারে বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যতের পথটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। অনিশ্চিত, বন্ধুর আর হতাশার। জাতীয় দলের সাম্প্রতিক ব্যর্থতার পেছনে অনেকেই দোষ দেখছেন নির্বাচক প্যানেলের। দীর্ঘদিন ধরে আস্থা প্রত্যাশার প্রতিদান দিতে ব্যর্থ হওয়া ক্রিকেটারদের টানা সুযোগ দেওয়ায় টি-টোয়েন্টি দল শক্তিমত্তা হারিয়েছে, এমনটি মনে করেন অনেকে।

 

বাংলাদেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় নির্বাচন নিয়ে প্রশ্নের যেন শেষ নেই। বিশেষত মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর নেতৃত্বাধীন নির্বাচক প্যানেল নিয়ে তীব্র সমালোচনা রয়েছে। তবে মেয়াদ শেষ হলেও চলতি বছরের জুন মাসে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল নান্নুকে। অথচ প্রধান নির্বাচকের দায়িত্বের মেয়াদ নিকট ভবিষ্যতেও শেষ হচ্ছে না।

 

২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রধান নির্বাচক ছিলেন ফারুক আহমেদ। ওই বছরই নতুন করে নির্বাচক প্যানেল সাজায় বিসিবি। যেখানে গঠন করা হয় দ্বিস্তর বিশিষ্ট নির্বাচক প্যানেল। যার চরম বিরোধী ছিলেন ফারুক আহমেদ। এছাড়াও দল গঠনে বোর্ডের হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে ফারুক নির্বাচকের পদ থেকে সরে দাঁড়ান। তখন প্রধান নির্বাচকের পদ থেকে ফারুক আহমেদ সরে দাঁড়ালে বিসিবি আটকে থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান। পদত্যাগের বিষয়ে বিসিবি সভাপতি তখন আরও বলেন, ‘ফারুক আমার অত্যন্ত প্রিয়। তার জন্য চিফ সিলেক্টর পদটি রাখা হয়েছে। এরপরও যদি তার অস্বস্তি থাকে হি শুড লিভ। এখানে ঝামেলা করার কোন দরকার নাই।

 

অথচ বাংলাদেশ দল কিভাবে ভাল করতে পারে সেই চিন্তা বাদ দিয়ে বিরাট সংখ্যা নিয়ে তারাই থেকে যান বিশ্বসফর গুলোতে। এমনকি জৈব বলয়ে থাকতে হবে বলে উঠেন না হোটেলে। মাশরাফি  সেই দিকে ইঙ্গিত করে আরও আগেই বলেছিলেন,  ‘একটা ওয়ার্ল্ডকাপে ৫০ জন যাচ্ছেন। কেউ কি নিজের টাকায় গেছেন নাকি একটু শোনেন তো! তাদের অবদান কী? ’

 

আমাদের দলে পাওয়ার হিটার নেই’—বাংলাদেশ ক্রিকেট দল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলতে নামলেই এটি নিয়ে আক্ষেপ হয়।পাওয়ার হিটার নেইবলে যে আক্ষেপ আমাদের, সেটি কেন, সে উত্তর খুঁজে নিতে খুব বড় ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার নেই। আমাদের ক্রিকেটারদের অবস্থা অনেকটা সারা বছর প্রশ্ন ফাঁস করে পরীক্ষা দেওয়া ছাত্রদের মতো।দেশের মাঠে স্টারমার্ক পেলেও আন্তর্জাতিক মঞ্চে ফেল করে বসেন সব সময়ই। সম্প্রতি দেশের মাঠেও ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স নিয়ে তৈরি হয়েছে বেশ আতঙ্কই। হবেই না কেন, হুটহাট করে দল নির্বাচন করে মাঠে নামলে তাই হওয়ার কথা।

 

সাইফ হাসানকে তরিঘরি করে অভিষেক ঘটিয়ে দুই ম্যাচ পরে বাদ দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হলো টেস্ট স্কোয়াডে। তার বদলি হিসেবে রাব্বি ইমনকে আনা হচ্ছে সরাসরি এনসিএল থেকে টি-টোয়েন্টি স্কোয়াডে। ইয়াসির আলী অলমোস্ট বছর ধরে পানি টানে, তাও টি ২০ তে অভিষেক হয় সাইফ হাসানের। এনসিএলের মাঝ থেকে ইমন আর রাব্বিকে ডেকে এনে ১৩ ১৪ তম সদস্য বানাই দিলো। এদের না ডাকলে কি বা হতো? প্লেয়ার গুলার মনোবলই ভেঙে দেয় তারা। অপরিণত বয়সে অভিষেক ঘটিয়ে পরে দল থেকে বাদ দিয়ে তখন বলে এদের নিয়ে আমাদের চিন্তা আছে। দলেই যদি না নেয়া হয় তবে চিন্তা থেকে ঠিক কী লাভ, কিংবা ঠিক কি কারণে অভিষেক করায় তা স্পষ্ট করতে পারেন না কখনো প্রধান নির্বাচক।

 

ব্যর্থতার এই ক্যান্সারের চিকিৎসা করতে হলে ফিরতে হবে মূলে। বদলাতে হবে ক্রিকেট কাঠামো। সরাতে হবে নান্নু-পাপনদের মত গংদের। এই সু-চিকিৎসা শেষে তবেই আসতে পারে ক্রিকেটের সুদিন।