ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, জুলাই ৫, ২০২৪ |

EN

উত্তপ্ত হয়ে উঠছে রাজপথ

বিশেষ প্রতিবেদক | আপডেট: সোমবার, নভেম্বর ২২, ২০২১

উত্তপ্ত হয়ে উঠছে রাজপথ
হঠাৎ করে বিভিন্ন ইস্যুতে রাস্তায় আন্দোলন, সংগ্রাম এবং উত্তাপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রাজপথ খুব শীঘ্রই উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে এমন শঙ্কাও করছেন কেউ কেউ। তবে অধিকাংশ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন যে, রাজনীতি কিছুটা কর্মসূচি মুখর হবে বটে, তবে সত্যিকার অর্থে রাজপথ উত্তপ্ত হয়ে ওঠা বলতে যা বোঝায় তেমন কিছুর সম্ভাবনা আপাতত নেই। এমনকি খালেদা জিয়ার যদি খুব খারাপ পরিণত হয় তারপরও বাংলাদেশের রাজনীতিতে আপাতত বড় ধরনের কোন উত্তেজনার শঙ্কা নেই বলেই বিশ্লেষকরা মনে করেন। গত কয়েকদিন ধরে রাজপথে নানা কর্মসূচি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এর কিছু রাজনৈতিক, কিছু অরাজনৈতিক।

শিক্ষার্থীরা গত দুইদিন ধরে রাজপথ অবরোধ করে হাফ ভাড়ার দাবি করছে। শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার যে ব্যবস্থা ছিল সেই ব্যবস্থাটা এখন উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। বরং কোথাও কোথাও গাড়ির চালক এবং হেলপারদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের নানা রকম অপ্রীতিকর ঘটনারও খবর পাওয়া যাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অবরোধ করে তারা প্রতিবাদ করেছে। এখন তারা ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের যেকোনো আন্দোলনই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং এই আন্দোলন গুলো খুব সহজেই গতি পায়। কারণ শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধ এবং তারা নির্ভীক। এর আগেও আমরা দেখেছি নিরাপদ সড়ক আন্দোলন এবং কোটা আন্দোলন  ঢাকা শহরকে অচল করে দিয়েছিল এবং শেষ পর্যন্ত সরকার শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়েছিল। এবারের হাফ ভাড়ার আন্দোলনের পেছনে যদি অন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্য না থাকে তাহলে এই দাবিও হয়তো শেষ পর্যন্ত সরকার মেনে নেবে। কাজেই এটি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হওয়ার শঙ্কা দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু এর পিছনে যদি কোনো রাজনৈতিক ইন্ধন থাকে এবং রাজনীতির সুযোগ সন্ধানীরা যদি এটাকে কাজে লাগিয়ে কিছু করতে চায় সেক্ষেত্রে হয়তো শিক্ষার্থীদের কে নিয়ে মাঠে নামিয়ে অন্য কোনো মতলব হাসিলের চেষ্টা চলতে পারে।

তবে গত কয়েকদিন ধরে বেগম খালেদা জিয়ার ইস্যুতেই বেশ উত্তেজনা প্রদর্শন করছেন বিএনপি নেতারা। গতকাল গণ অনশনের পর সমাবেশের তারিখ ঘোষণা করেছে বিএনপি। আজকে বিএনপির ৬ এমপি সংসদ ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করেছেন এবং প্রয়োজনে তারা সংসদ থেকে পদত্যাগ করবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন। ৬ এমপির পদত্যাগে জাতীয় সংসদের খুব ক্ষতি হবে বলে মনে করা হয় না এবং তাদের চাপে সরকার বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেবে এমন ভাবারও কোনো কারণ নেই। তবে বিএনপির একটি অংশ বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে একটি আন্দোলনের প্রক্রিয়ার কথা ভাবছে। আর সেই আন্দোলন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই তারা ধাপে ধাপে কর্মসূচি নিচ্ছে। বিশেষ করে গতকাল গণ অনশন কর্মসূচির সময়ই বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে থেকে হরতালের জন্য চাপ আসে। এক পর্যায়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বক্তব্য রাখাও বন্ধ করে দেন। কিন্তু বিএনপির মধ্যে একটি আন্দোলনের চাপ আছে এবং বেগম খালেদা জিয়ার ইস্যুতে, বিশেষ করে তাকে বিদেশে পাঠানোর দাবিতে একটি আন্দোলনের পটভূমি তৈরি করার জন্য চেষ্টা করছে।

বিএনপির লক্ষ্য একটাই। শেষ পর্যন্ত যদি বেগম খালেদা জিয়ার পরিস্থিতির অবনতি হয় তাহলে এই আন্দোলনকে যেন তারা এগিয়ে নিতে পারে। দীর্ঘদিন পর আবার ২০ দলকে সক্রিয় করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আজ ২০ দলের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। আর এর মধ্য দিয়ে বিএনপি খালেদা জিয়ার ইস্যুতে একটি রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। যদিও বিএনপি বলছে যে, বেগম খালেদা জিয়ার বিষয়টি রাজনৈতিক নয় কিন্তু বিএনপি রাজনৈতিকভাবে চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে চাইছে। খালেদা জিয়াকে এই বিদেশে পাঠানো নিয়ে রহস্য তাই ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে। বেগম জিয়াকে কি বিদেশে পাঠানোর পেছনে অন্য কোন রাজনৈতিক লক্ষ্য আছে কিনা সেটিই এখন বড় প্রশ্ন হিসেবে সামনে এসেছে।