ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: সোমবার, নভেম্বর ২২, ২০২১
বেগম
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার মধ্যেই তারেকের দেশে ফেরা নিয়ে
গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলছেন, তারেক জিয়া দেশে ফেরার জন্য
প্রস্তুত হচ্ছে। এটা কি রাজনৈতিক
গিমিক নাকি সত্যি সত্যি
তারেক জিয়া দেশে ফিরছেন এ
নিয়ে বিভিন্ন রকম প্রশ্ন উঠেছে।
তারেক জিয়া তার মাকে লন্ডনে
নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি রাজনৈতিক
কৌশল হিসেবে দেশে ফেরার গুঞ্জন
ছড়িয়েছেন বলেই অনেকে মনে
করছেন। কারণ তারেক জিয়া
কিভাবে দেশে ফিরবেন এ
নিয়ে অনেকগুলো জটিলতা রয়েছে।
প্রথমত, তারেক জিয়ার ২০১৪ সাল থেকে
বাংলাদেশের পাসপোর্ট নেই এবং বাংলাদেশের
পাসপোর্ট তিনি নবায়ন করেননি।
বাংলাদেশের পাসপোর্ট নবায়ন যদি তিনি না
করে থাকেন তাহলে কি নিয়ে তিনি
দেশে ফিরবেন এবং এখন পর্যন্ত
তিনি নতুন পাসপোর্ট এর
জন্য বাংলাদেশ দূতাবাসে কোনো আবেদনও করেননি।
কাজেই তার দেশে ফেরা
নিয়ে যেভাবে গুঞ্জন ছড়ানো হচ্ছে তার বাস্তবতা কতটুকু
এ নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে।
দ্বিতীয়ত,
তারেক জিয়া এখন কোন বৈধতায়
যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন সেটিও একটি বড় ইস্যু।
কারণ যুক্তরাজ্যে যদি তারেক জিয়া
রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে অবস্থান করেন তাহলে তিনি
একজন শরণার্থী। শরণার্থী হিসেবে তিনি যদি বাংলাদেশে
ফিরতে চান তাহলে তাকে
শরণার্থী হিসেবেই বাংলাদেশে পাঠানো হবে। অন্য কোন
দেশে তিনি যেতে পারবেন
না এবং পরবর্তীতে তার
আর কোন রাজনৈতিক আশ্রয়
লাভের সুযোগ থাকবেনা। এই ক্ষেত্রে তাকে
রাজনৈতিক আশ্রয় আবেদন প্রত্যাহার করতে হবে। অর্থাৎ
তিনি আর রাজনৈতিক আশ্রয়
লাভের ইচ্ছুক নন মর্মে মুচলেকা
দিয়ে তাকে একটি শরণার্থী
পাস দেয়া হবে। যে পাস
নিয়ে তিনি তার নিজ
দেশে পৌঁছতে পারবেন।
তৃতীয়ত, অনেকেরই ধারণা তারেক জিয়া হয়তো ব্রিটিশ পাসপোর্ট গ্রহণ করেছেন বা ব্রিটিশ নাগরিকত্ব
নিয়েছেন। কারণ বৃটেনের আইন
অনুযায়ী ১০ বছর টানা
কেউ অবস্থান করলে তিনি নাগরিকত্বের
জন্য যোগ্য হন। তার মেয়ে
জাইমা রহমান বৃটিশ নাগরিকত্ব নিয়েছেন এটি মোটামুটি নিশ্চিত
এবং তিনি সেখানে ব্যারিস্টারি
ডিগ্রিও গ্রহণ করেছেন। কিন্তু তারেক জিয়া আদৌ ব্রিটিশ
নাগরিকত্ব নিয়েছেন কিনা সে সম্পর্কে
স্পষ্ট কোন তথ্য পাওয়া
যায়নি। তারেক জিয়া যদি ব্রিটিশ
নাগরিকত্ব পাযন এবং তার
যদি ব্রিটিশ পাসপোর্ট থাকে তাহলে তিনি
নিঃসন্দেহ ব্রিটিশ পাসপোর্ট নিয়ে ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবে আসতে পারেন। সেক্ষেত্রে
তার জন্য বাংলাদেশে আসাটা
অনেকটাই সহজ হবে এবং
অনেকেই মনে করছেন, যদি
শেষ পর্যন্ত তারেক জিয়ার বাংলাদেশে আসার বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা
থাকে তাহলে ব্রিটিশ পাসপোর্ট এর ভরসাতেই তিনি
আসবেন। কারণ ব্রিটিশ পাসপোর্ট
নিয়ে বাংলাদেশে আসলে তাকে বিমানবন্দরে
আটক করা কঠিন হবে।
তবে
আইনজীবিদের সূত্রে বলা হচ্ছে যে,
তিনি যে পাসপোর্ট নিয়েই
বাংলাদেশে আসেন না কেন,
তাকে গ্রেপ্তারের আইনগত কোনো বাধা নেই।
কারণ তিনি যে দেশের
নাগরিকই হোক না কেন,
বাংলাদেশে অপরাধ সংগঠিত করেছেন এবং বাংলাদেশের আদালতের
রায়ে তিনি দণ্ডিত হয়েছেন।
কাজেই বাংলাদেশের আইন তার জন্য
প্রযোজ্য হবে। তিনি যে
দেশের নাগরিকই হোন না কেন।
আর এ কারণেই তারেক
জিয়ার দেশে ফেরা নিয়ে
গুঞ্জনটি শ্রেফ একটি মনস্তাত্ত্বিক বিষয়
বলেই অনেকে মনে করছেন। কারণ
তারেক জিয়া দেশে ফেরার গুঞ্জন
ছড়িয়ে তার মাকে যেন
লন্ডনে পাঠানো হয় সে ব্যাপারে
সরকারের উপর একটি মনস্তাত্ত্বিক
চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। এই মনস্তাত্ত্বিক চাপের
ফলাফল কি হবে তা
দেখা যাবে খালেদা জিয়ার
ব্যাপারে সরকার তার অবস্থান পরিবর্তন
করে কিনা তার উপর।
সুত্র:
বাংলাইনসাইডার