নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: রবিবার, নভেম্বর ২১, ২০২১
রাজধানীর
এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার
অসুস্থতার দায়ভার সরকারকে নিতে হবে বলে
জানিয়েছেন সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার
রুমিন ফারহানা।
রবিবার
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে
জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত এক মানবন্ধনে এ
কথা বলেন তিনি। বিএনপি
প্রধানের মুক্তি ও বিদেশে উন্নত
চিকিৎসার দাবিতে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে
মানববন্ধন করে দলটি থেকে
নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা।
রুমিন
ফারহানা বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া
কারাগারে যাওয়ার সময় পায়ে হেঁটে
গেছেন। গত তিন বছরে
সরকারের হেফাজতে থেকে বেগম জিয়া
অসুস্থ হয়েছেন। এর দায় সরকারকে
নিতে হবে।’
সংরক্ষিত
আসনের এই সংসদ সদস্য
বলেন, ‘আপনারা জানেন খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য তার পরিবারের
পক্ষ থেকে বারবার আবেদন
করা হয়েছে। তিনি জীবন-মৃত্যুর
সন্ধিক্ষণে। তিনি যখন কারাগারে
যান তিনি পায়ে হেঁটে
গেছেন কিন্তু গত তিন বছরে
তার কি হাল হয়েছে
এটা দেশের মানুষ জানে। এর দায় এই
সরকারকে নিতে হবে। কারণ
গত তিন বছরে তিনি
দল, পরিবার এবং নিজের হেফাজতে
ছিলেন না। তিনি ছিলেন
আওয়ামী লীগের হেফাজতে।’
রুমিন
ফারহানা বলেন, ‘আমরা দেখি সামান্য
একটু হাঁচি, কাশি, সর্দি চিকিৎসার এমনকি রুটিন চেকআপের জন্য রাষ্ট্রপতি জার্মানি,
ইংল্যান্ডে যান। কিন্তু আমাদের
সরকার দলীয় এমপিরা আমাদের শোনায় ওনার বেস্ট চিকিৎসা
নাকি বাংলাদেশে হচ্ছে। বাংলাদেশে যদি সেরা চিকিৎসাটা
হতো তাহলে কেন আমরা দেখি
অতি সাধারণ মানুষও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে চিকিৎসা
জন্য ছুটে যাচ্ছে।’
গত
তিন বছরে বেগম জিয়ার
ওপর নিপীড়ন, নির্যাতন চালানো হয়েছে অভিযোগ করে এই সংসদ
সদস্য বলেন, ‘তাকে কোনো প্রকার
ট্রিটমেন্ট দেয়া হয়নি। যদি তিনি তার
অসুখের চিকিৎসা করাতে পারতেন, সরকার যদি সেই সুযোগ
দিতো তাহলে আজকে তার এই
অবস্থা হতো না। বেগম
খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। ৪০১ ধারায় সরকার
যেকোনো ব্যক্তিকে সাজাপ্রাপ্ত বা সাজাপ্রাপ্ত নয়
তাদেরকে শর্তযুক্ত বা শর্তহীনভাবে দণ্ড
মওকুফ করতে পারে কিংবা
দণ্ড স্থগিত করতে পারে।
‘এ
ধারায় খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করা
হয়েছে। সরকার দফায় দফায় তার মুক্তির মেয়াদ
বাড়িয়েছে। কিন্তু এখন আইনমন্ত্রী বলছেন
কোনোভাবে তার বিদেশে যাওয়ার
সুযোগ নাই। এটা একেবারেই
ডাহা মিথ্যা কথা এবং আইনের
অপব্যাখ্যা। আইনের ভুল ব্যাখ্যা। আমি
একজন আইনজীবী হিসেবে বলতে চাই, ৪০১
এর ক্ষমতাবলে সরকার যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’-বলেন
রুমিন ফারহানা।
দেশে
আইনের শাসন থাকলে নির্বাহী
আদেশের প্রয়োজন হতো না উল্লেখ
করে সংরক্ষিত আসনের এই সাংসদ বলেন,
দেশে যদি আইনের শাসন
থাকতো, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকতো, দেশে সুশাসন থাকতো
তাহলে কোর নির্বাহী আদেশের
প্রয়োজন হতো না। বহু
আগেই বেগম খালেদা জিয়া
জামিনে মুক্ত হতেন। জামিনে মুক্ত হতে যে শর্তগুলো
প্রয়োজন- সামাজিক অবস্থা, তার বয়স, তার
শারীরিক অবস্থা এর যেকোনো একটি
বিবেচনায় তিনি জামিন লাভের
যোগ্য। আমরা যেটা দেখলাম
এই ফ্যাসিস্ট সরকার তার জামিন দেওয়া
থাক দূরের কথা একটার পর
একটা মামলা বাড়িয়ে চলছে। আজকে আমি সরকারকে
আহ্বান জানাবো অবিলম্বে ৪০১ ধারায় বেগম
জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হোক। কারণ সরকার
জানে তারা চাইলেই এ
ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারে।
মানববন্ধনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে বিএনপি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার, বগুড়া-৬ আসনের সাংসদ গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, বগুড়া-৪ আসনের সাংসদ মোশাররফ হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ আমিনুল ইসলাম এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সাংসদ হারুরুর রশীদ অংশ নেন।