ছাত্রলীগ নেতাদের থানায় আটকে মারধরের ঘটনায় বিভাগীয় তদন্তে ফেঁসে যাচ্ছেন সাময়িক বরখাস্ত হওয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ। ডিএমপির তদন্তে সেদিনের ঘটনায় তার দায় খুঁজে পেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। পাশাপাশি এডিসি সানজিদা আফরিন, রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক ও ছাত্রলীগের নেতারাও দায় এড়াতে পারেন না বলে মনে করেন তারা। তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
মঙ্গলবার ডিএমপি কমিশনারের কাছে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। তদন্ত কমিটি মনে করছে, এই ঘটনায় পুলিশ ও প্রশাসনের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। এ কারণে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আরও শাস্তিমূলক ব্যবস্থার সুপারিশ করা হতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে।
৯ সেপ্টেম্বর রাতে বারডেম হাসপাতাল থেকে তুলে নিয়ে শাহবাগ থানা হেফাজতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তিন নেতাকে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে পুলিশের রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে।
এই ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে ডিএমপি। কমিটির সভাপতি ডিএমপি সদর দপ্তরের উপপুলিশ কমিশনার (অপারেশনস) আবু ইউসুফ। অপর দুই সদস্য হলেন রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (নিউমার্কেট জোন) শাহেন শাহ এবং অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা-মতিঝিল বিভাগ) মো. রফিকুল ইসলাম।
এই তদন্ত কমিটির ১৩ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই দিন তদন্ত শেষ করতে না পারায় ডিএমপি কমিশনারের কাছে আরও পাঁচ দিন সময় চায় কমিটি। পরে তাদের পাঁচ দিন সময় দেওয়া হয়। সোমবার পাঁচ দিন সময় শেষ হয়েছে।
এ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, তদন্ত কমিটি কাজ শেষ করে প্রতিবেদন দেবে। তারা সময় বৃদ্ধির জন্য যেহেতু আবেদন করেনি, তাই ধারণা করছি, নির্ধারিত সময়ে প্রতিবেদন দেবে।
জানা গেছে, তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ঘটনাস্থল বারডেম হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও সংগ্রহ করেছে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তদন্তে এই ঘটনার জন্য এডিসি হারুন ও সানজিদা, রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক, ছাত্রলীগের চার নেতা, শাহবাগ থানার পরিদর্শক গোলাম মোস্তফাসহ যাদের যতটুকু দায় পাওয়া গেছে, সেই বিষয়ে তদন্তে উল্লেখ করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘অনুসন্ধানে যাদের এই ঘটনায় দায় আছে, সবার বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। মঙ্গলবার ডিএমপি কমিশনারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে। অনুসন্ধানের নিয়ম অনুসরণ করে আমরা পুরো বিষয়টি তদন্ত করেছি। এখানে ঘটনার শুরু থেকে গতকাল পর্যন্ত যা ঘটেছে তা উল্লেখ করা হয়েছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি। কারও দায় বাড়িয়েও বলা হয়নি।’
তদন্ত কমিটি এই ঘটনার দায় অনুযায়ী জড়িত সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করেছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা। তবে কোন কর্মকর্তার কী শাস্তি সুপারিশ করেছেন, সে ব্যাপারে কিছু জানাননি এই কর্মকার্তা।