সুন্দরবনের নদীবাঁধ রক্ষায় ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে বারেবারে সুন্দরবনকে রক্ষা করছে বিস্তীর্ণ ম্যানগ্রোভ ঘেরা অঞ্চল।
সেজন্য প্রতি বছর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ম্যানগ্রোভ রোপণের কর্মসূচিও নেওয়া হয়েছে। অথচ সেই ম্যানগ্রোভ নির্বিচারে ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে। সেখানে তৈরি করা হচ্ছে বেআইনি মাছের ভেরি এবং পাকা বাড়ি।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মথুরাপুর-২ নম্বর ব্লকের নগেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মনি নদীর উপকূলে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে নির্বিচারে ম্যানগ্রোভ কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিমত, এক শ্রেণীর কাঠ মাফিয়া রমরমিয়ে এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি বন সুরক্ষার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের একাংশ এই মাফিয়াদের সঙ্গে জড়িত বলেও অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ওই ব্লকের বিডিও এবং বনদপ্তরে অভিযোগ জানানো হয়েছে।
কাঠ চুরির ঘটনা স্বীকার করে মথুরাপুর-২ নম্বর ব্লকের বিডিও নাজির হোসেন জানিয়েছেন, আমরা অভিযোগ পাওয়ার পর বনদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছিলাম। কিছু কাঠ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দল বিজেপির পক্ষ থেকে সরাসরি শাসক দল তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে। যদিও বিরোধীদের পক্ষ থেকে তোলা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা মথুরাপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জয়ভূষণ ভান্ডারী জানিয়েছেন, সব মিথ্যা কথা। কোনো গাছ কাটা হয়নি।
প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে গুরুত্ব দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুন্দরবনকে বাঁচাতে পাঁচ কোটি ম্যানগ্রোভ রোপণের কথাও ঘোষণা করেছিলেন। সেইমতো কাজ শুরু হলেও বর্তমানে তা বন্ধ। পরিবেশবিদদের দাবি, সুন্দরবনকে একমাত্র বাঁচাতে পারে ম্যানগ্রোভের সংরক্ষণ। আইলা, আমফান, যশোরের মত প্রাকৃতিক বিপর্যয় প্রতিরোধ করে সুন্দরবনকে রক্ষা করছে সুন্দরী গাছের অরণ্য। এভাবে ধ্বংস হতে থাকলে খুব বেশিদিন সুন্দরবনকে বাঁচানো যাবে না।
তাদের অভিমত, সমুদ্রে ঘন ঘন নিম্নচাপ হানা দিচ্ছে। যদি এরই মধ্যে তা কোনো একটা বড়সড় সুপার সাইক্লোনে পরিণত হয়। অচিরেই তলিয়ে যেতে পারে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা।