কবিতা: শেফালীর বিয়ে
কচি কচি গাল দুটো তার চোখ টানা টানা,
এক দৃষ্টিতে চেয়ে দেখে মায়ের ধান ভানা,
চুলগুলো তার কুচকুচে কালো স্তব্ধ গলার সুর
পড়াশোনায় বেশ পারদর্শী স্বপ্ন তার বহুদূর।
বারো বছরের সেই শেফালী স্কুলে যায় হেসে খেলে
হঠাৎ একদিন শেফালিকে মা বিয়ের কথা বলে
মাগো তোমার দু'টো পায়ে ধরি
আমাকে তোমরা দিওনা গো পর করি
ইচ্ছে আমার পড়াশোনা করবো চাকুরী করবো বড়ো,
পায়ে ধরি মাগো বিয়ের চিন্তা মাথা থেকে এবার ছাড়ো।
এতকিছু বুঝিনা বিয়ে দিতে চায় আমরা সবাই তোর,
ঐ দেখ মানুষ আসতেছে, নে লাল শাড়িটা পর।
জোড় করে ওরা শেফালিকে বিয়ে দিয়ে দিলো
স্বামী তার যৌতুক হিসেবে অনেক টাকা নিলো
কিছুদিন পর স্বামী তার বিদেশ গেলো চলে,
শ্বাশুড়ী শেফালিকে যৌতুকের আরও টাকা আনতে বলে।
কুচকুচে কালো চুলগুলো তার নেই যে এখন আর,
মুখ শুকিয়ে গেছে ভেঙ্গে গেছে তার কমরের ক'খানা হাড়।
নির্যাতিতা শেফালির জীবন কাটে এখন দুখে,
হতাশার ছবি দেখা যায় তার গোলগাল সেই মুখে,
মনে মনে ভাবে আমি তো এখন ঝরে যাওয়া শিউলি ফুল,
মাটি থেকে উপড়ে ফেলা তেঁতুল গাছের মূল।
ভেঙ্গে গেলো তার দুচোখে দেখা স্বপ্ন রাশি রাশি
মুছে গেলো ছোট্ট শেফালির স্বপ্নমাখা হাসি।
লেখক: ফারজানা পপি, শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়