যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ায় নির্বাচনি জালিয়াতি ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক গ্রেফতারের পর এ ঘটনাকে ‘বিচার ব্যবস্থার জন্য উপহাস’ বলে অভিহিত করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে করা এ মামলাকে তিনি ‘নির্বাচনে হস্তক্ষেপ’ বলেও জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার আদালতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার দাবি, তিনি কোনো ভুল করেননি। নির্বাচনি জালিয়াতি ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বৃহস্পতিবার গ্রেফতার ও পরে ছাড়া পাওয়ার পর ট্রাম্প এ দাবি করেন। খবর এএফপির।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকালে জর্জিয়ার ফুলটন কারাগারে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। পরে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। অবশ্য এর ২০ মিনিটের মাথায় জামিনে মুক্ত হন তিনি। দুই লাখ মার্কিন ডলারের বন্ডে তাকে জামিন দেওয়া হয়।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রেফতারের পর অবশ্য সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টকে বেশিক্ষণ কারাবন্দি থাকতে হয়নি। তিনি কারাগার ছিলেন ২০ মিনিটের মতো। সেই সময় তার আঙুলের ছাপ ও মুখের ছবি (মাগ শট) নেওয়া হয় এবং পরে তা প্রকাশ করা হয়।
এদিকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর ট্রাম্প বিমানবন্দরের উদ্দেশে কারাগার ত্যাগ করেন। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগও অস্বীকার করেন তিনি। জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের রাজধানী আটলান্টা ত্যাগের আগে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখানে যা ঘটেছে তা ন্যায়বিচারের সঙ্গে প্রতারণা। আমরা কোনো কিছু ভুল করিনি। আমি কোনো ভুল করিনি।’
সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট অভিযোগ করেন, ‘তারা যা করছে তা হলো নির্বাচনে হস্তক্ষেপ।’
অবশ্য ট্রাম্প ঠিক কার বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপের অভিযোগ করছেন তা উল্লেখ করেননি। তবে তিনি নিয়মিতভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং অন্যান্য ডেমোক্র্যাটের বিরুদ্ধে তার পুনরায় নির্বাচন করার কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে আবারও নিন্দা জানিয়েছেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম বলছে, বৃহস্পতিবার নির্বাচনে কারচুপি সংক্রান্ত ১৩টি অভিযোগের ভিত্তিতে জর্জিয়া জেলে গ্রেফতার করা হয় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। তবে সেই গ্রেফতারির স্থায়িত্ব ছিল মাত্র ২০ মিনিট। তার পরই জামিনে ছাড়া পেয়ে যান ৭৭ বছর বয়সি এ রিপাবলিকান নেতা।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং ট্রাম্প ইতোমধ্যে সেই নির্বাচনে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন। এ ছাড়া প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে মনোনয়নের দৌড়ে থাকা রিপাবলিকান পার্টির অন্য নেতাদের চেয়ে জনমত জরিপে ট্রাম্প এগিয়েও রয়েছেন।
এ পরিস্থিতিতে তার বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও দাবি করে আসছেন সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
প্রসঙ্গত, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটির সূত্রপাত ২০২১ সালের ২ জানুয়ারি। ওই দিন জর্জিয়ার প্রধান নির্বাচনি কর্মকর্তা ব্র্যাড র্যাফেনসপারগারকে ফোন করে অঙ্গরাজ্যটিতে নিজের পরাজয় ঠেকানোর ব্যবস্থা করতে বলেন ট্রাম্প। কিন্তু ব্র্যাড তার এ অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন।
এর চার দিন পর ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ট্রাম্পের সমর্থকরা মার্কিন গণতন্ত্রের প্রতীক ক্যাপিটল হিলে আক্রমণ করেন। ওই দিন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে সিনেটের স্বীকৃতি দেওয়ার কথা ছিল।