Can't found in the image content. আমাদের দেশ নিয়ে এত মাথাব্যথা কেন: কাদের | ফ্রিডম বাংলা নিউজ
ফ্রিডম বাংলা নিউজ

রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

আমাদের দেশ নিয়ে এত মাথাব্যথা কেন: কাদের

কাদের বলেন, “তারা তাদের কথা বলুক, আমরা আমাদের কাজ করব।”


ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: রবিবার, আগস্ট ২০, ২০২৩

আমাদের দেশ নিয়ে এত মাথাব্যথা কেন: কাদের
বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো কেন ‘মাথা ঘামাচ্ছে’ তা ‘বুঝতে পারছেন না’ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, “২০-২২টি দেশে এ বছর ইলেকশন হচ্ছে। কিন্তু কোথায় কারও কোনো কথা, কোথাও ইলেকশন নিয়ে বা অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কোনো কথা নেই।

“একুয়েডরের প্রেসিডেন্ট ক্যানডিডেটকে মেরে ফেলেছে। এইসব নিয়ে তো কেউ কোনো কথা বলে না; বড় বড় দেশ, শক্তিগুলো। আমাদের দেশ নিয়ে এত মাথাব্যথা কেন? কারণটা কী, আমরা তো বুঝি না।”

তবে ভূ-রাজনৈতিক কারণে কৌশলগতভাবে বাংলাদেশ নিয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ থাকবে বলে মনে করেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা কাদের।

আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ এই দুই দেশের ‘মাঠের লড়াইয়ে’ পরিণত হচ্ছে কিনা- সংবাদ সম্মেলনে এই প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, “কেন তা হবে? বাংলাদেশের ইলেকশন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এখন বিভিন্ন দেশের এ অঞ্চলকে ঘিরে জিওপলিটিক্যাল স্ট্র্যাটেজি আছে। সেখানে আমেরিকার একটা ইন্টারেস্ট আছে, ভারতেও আছে। থাকাটা খুব স্বাভাবিক। ওদিকে চীন আছে, একটা বড় শক্তি।”

বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনের দিন-তারিখ জানাতে রোববার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন সেতুমন্ত্রী। সেখানে নির্বাচন ও বিদেশি তৎপরতা নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।

বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ‘তৎপর’ যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর কূটনীতিকরা। আসন্ন নির্বাচন ‘সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য’ হওয়ার তাগিদ দিচ্ছেন তারা।

গত মে মাসে যুক্তরাজ্য সফরের সময় শেখ হাসিনা বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র হয়ত তাকে ক্ষমতায় চায় না বলেই বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

এরপর আওয়ামী লীগের জোটসঙ্গী বাম দল ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন সংসদে বলেছিলেন, ঢাকাকে বাগে আনতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ওয়াশিংটন। তারা সেন্ট মার্টিনস দ্বীপ চায়, কোয়াডে বাংলাদেশকে চায়।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র সম্প্রতি বলেছিলেন, “আমরা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে শ্রদ্ধা করি এবং সেন্ট মার্টিন’স দ্বীপ নেওয়ার বিষয়ে কোনো ধরনের আলোচনায় আমরা কখনও যুক্ত হইনি।”

এসব নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে আলোচনার মধ্যেই বুধবার এক আলোচনাসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আসলে বাংলাদেশকে ব্যবহার করে বঙ্গোসাগরের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। আর তা হলে এই অঞ্চল হয়ে উঠবে অস্থিতিশীল।

তিনি বলেন, “আমেরিকার উদ্দেশ্য বাংলাদেশে নির্বাচন না, এদের উদ্দেশ্য গণতন্ত্র না। আমাদের গণতন্ত্রের নাম দিয়ে, নির্বাচনের নাম দিয়ে, নানা নাম দিয়ে এদেশে এমন একটা অবস্থা সৃষ্টি করতে চায়, যাতে করে ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগরের জায়গাটা ব্যবহার করতে পারে।”

জাতীয় নির্বাচনের বাকি আর চার মাস। এই সময়টা সরকারের জন্য ‘চ্যালেঞ্জিং’ বলে মনে করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “চ্যালেঞ্জিং, তবে আমরা মনে করি রাজনীতিতে, রাষ্ট্রীয় জীবনে, ব্যক্তিগত জীবনে কোনো চ্যালেঞ্জই অনতিক্রম্য নয়, সব চ্যালেঞ্জই অতিক্রম করা যায়, ইনলাশ্লাহ আমরা অতিক্রম করব।”

দেশের অভ্যন্তীরণ বিষয়ে ‘বিদেশি হস্তক্ষেপ’ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “তারা তাদের কথা বলুক, আমরা আমাদের কাজ করব।”

সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের জনগণের কাছে আমাদের প্রতিশ্রুতি, আমরা ফেয়ার ইলেকশন করব, ফ্রি ইলেকশন করব। আমরা পিসফুল ইলেকশন করব, সেটা আমাদের ইন্টারনাল বিষয়। আমাদের নিয়মটা আছে, আমাদের সংবিধান।

“যেভাবে গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে ইলেকশন হবে আমরা তার বাইরে যাচ্ছি না। আমরা বরং আমাদের ইলেকশন কমিশনকে ইন্ডিপেনডেন্ট করেছি। বর্তমানে ইলেকশন কমিশন ইন্ডিপেনডেন্ট। এটা প্রাইম মিনিস্টার অফিসের সাব-সার্ভিয়ান কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। সে অবস্থায় ইলেকশন হতে অসুবিধা কোথায়?”

কাদের বলেন, “আমাদের ইলেকশন নিয়ে অন্য কারও মাথাব্যথা। ভারত গতকাল আমেরিকাকে তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তারা তাদের ওপিনিয়ন জানিয়েছে। (ভারত) আমাদেরকে কখনও বলেনি তোমার ইলেকশনে সেই কর, তত্ত্ববধায়ক আন, ইলেকশন সিস্টেম…এসব কথা আমেরিকাও বলেনি।

“বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং সংসদ ভেঙে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন কখনও এসব বলেনি। বিএনপি যে দাবিগুলো নিয়ে আজকে গো ধরেছে, এগুলো করতেই হবে, তা না হলে ইলেকশন নয়- সেই দাবিগুলোর ব্যাপারে কিন্তু আমেরিকাও এযাবৎ কিছু বলেনি। আমি পারসোনালি জিজ্ঞেস করেছি আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন কেউই বলেনি যে তত্ত্বাবধায়কের দরকার আছে, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করতে হবে। তাদের দেশে এটা নেই, দুনিয়ার কোথাও নেই, কেন বাংলাদেশে হবে?”

বিদেশিদের তৎপরতা নিয়ে আরেক প্রশ্নে কাদের বলেন, “আপনি রাতে ঘুমিয়ে সকালে ঘুম থেকে উঠে চোখ কচলাতে কচলাতে নাস্তা করার আগে দুয়েকটা দূতাবাসে ছুটে যান। এটা তো আপনি করেন, আমরা তো করি না।

“ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমাদের কাছে সময় চেয়েছে, আমরা তাদের সময় দিয়েছি। আমরা রবাহূতের মত ওখানে যাইনি। আমেরিকান অ্যাম্বাসেডর লাঞ্চের দাওয়াত দিয়েছে, আমরা সে লঞ্চের দাওয়াতে গিয়েছি, কথাবার্তা বলেছি।

“আমি স্পেসিফিকালি মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে জিজ্ঞেস করেছিলাম তিন বিষয়ে (বিএনপির তিন দাবি) আপনার মতামত কী? তিনি বলেছেন, ‘এসব বিষয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নাই’।”