পেপারলেস অফিস প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে দ্বিতীয় ধাপে ডি-নথির (ডিজিটাল নথি) সাথে যুক্ত হলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সহ দেশের আরও ১০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এই নিয়ে মোট ১৮ টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ডি-নথি কার্যক্রম শুরু হলো।
ইউজিসিতে রোববার (১৩ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি-নথি কার্যক্রম উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, এমপি।
ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ- এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, এমপি।
ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. নূরুল আলম অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ইউজিসি'র ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট, কমিউনিকেশন এন্ড ট্রেনিং বিভাগের পরিচালক ড. সুলতান মাহমুদ ভূইয়া।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ডি নথির মাধ্যমে যেকোন স্থান থেকে ফাইল নিষ্পত্তি করা যায়। ফলে কোন ফাইল আটকে থাকছে না, বাড়ছে কাজের গতি। এতে দাপ্তরিক কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির সংস্কৃতি তৈরি হচ্ছে এবং দুর্নীতির সুযোগ কমে যাচ্ছে। তিনি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ডি নথি বাস্তবায়নের আহ্বান জানান। এজন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধির আহবান জানান। তিনি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ডি নথি বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ইউজিসিকে ধন্যবাদ জানান।
মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ডি নথির ব্যবহার বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের দাপ্তরিক কাজ গতিশীলতা নিশ্চিত করবে। তিনি সবাইকে গতানুগতিক মানসিকতা পরিহার করে ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমে পাঠদানের বাইরে আইসিটি অবকাঠামো বিষয়ে বাস্তবজ্ঞান প্রদান এবং নিজেদের বিশ্ববদ্যিালয়ের জন্য ডি-নথির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতের পরামর্শ দেন।
উপমন্ত্রী আরও বলেন ইউজিসির আইনী সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সরকার কাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি ইউজিসি দেশের কলেজগুলোর শিক্ষার মান তদারকি করতে পারেন বলে মন্তব্য করেন। এছাড়া, এনডাউমেন্ট ফান্ড গঠন এবং গবেষণা খাতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও অ্যালামনাই যুক্ত করতে ইউজিসিকে একটি ফ্রেমওয়ার্ক তৈরির অনুরোধ করেন।
অনুষ্ঠানে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশে পদার্পণ করছি। ডিজিটাল নথি বাস্তবায়ন করা গেলে ফাইলের স্তূপ কমবে, সেবা প্রত্যাশীরা স্মার্ট সেবা পাবেন এবং ভোগান্তি কমে যাবে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ডিজিটাল নথি বাস্তবায়নে আন্তরিক হওয়ার পরামর্শ দেন।
প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন তাঁর বক্তব্যে বলেন, স্মার্ট সিটিজেন তৈরি করতে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। উদ্ভাবন ও গবেষণায় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নেতৃত্ব দিতে হবে। শিক্ষার্থীরা যেন কর্মদক্ষতা অর্জন করতে পারে এবং আত্মমর্যাদা নিয়ে বেড়ে ওঠতে পারে সেদিকে নজর দেওয়ার জন্য তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান।
এছাড়া, অনুষ্ঠানে ইউজিসি সদস্যবৃন্দ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ, রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো: ওহিদুজ্জামান, ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা সহ আইসিটি সেলের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথম ধাপে দেশের ৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ডি নথি কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়।