আওয়ামী লীগ সরকার টাকা পাচারকারীদের পৃষ্ঠপোষক ও সহযোগী বলে অভিযোগ করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। বলেছেন, সরকারের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। সরকার দেশকে ‘লুটেরাদের রাজ্যে’ পরিণত করেছে।
রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশে শনিবার গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা এসব কথা বলেন। সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ের কর্মসূচিতে গ্রেফতার হওয়া ভাসানী অনুসারী পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু ইউসুফ সেলিমসহ সব রাজবন্দির মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
আওয়ামী লীগের খাতিরের ব্যবসায়ীরা হাজার কোটি টাকা পাচার করছেন দাবি করে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দুই কোটি টাকার জন্য খালেদা জিয়ার ১০ বছর সাজা দিলেন, ১ হাজার কোটি ডলার পাচারের জন্য কত সাজা হওয়া প্রয়োজন?
ভারত ও চীনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশন পুলিশকে হুঁশিয়ার করেছে। ভারত বলে দিয়েছে, দেশের মানুষের ইচ্ছানুসারে নির্বাচন হবে। আওয়ামী লীগের শরিক বাম নেতারা চীনে গিয়ে খালি হাতে ফিরেছেন। একে একে এই সরকারের সব বাতি নিভে যাচ্ছে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম রব সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে বলেন, রিজার্ভ নাই, ডলার নাই। টাকা পাচারকারীদের কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ভোট হবে, তা পাগলেরাও বিশ্বাস করে না।
গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, এক দেশে দুই আইন চলছে। আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের জন্য আলাদা আইন। ২৯ জুলাই বিরোধীদের ‘ড্রেস রিহার্সেল’ কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের আসল চেহারা দেখিয়েছে।
সরকারের আত্মীয়স্বজন লাখো কোটি টাকা লুট করেছে অভিযোগ করে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, এই লুটপাটের ভাগ পুলিশ-প্রশাসনও পায়। কিছু লোকের পকেট ভরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে চায়।
বাসে আগুনের কথা বলে আর জনগণকে ভোলানো যাবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ তাদের লোকজন দিয়ে বাসে আগুন দিয়েছে। পুলিশের ছায়াতলে থেকে দলটির লোকজন তাণ্ডব চালিয়েছে। পুলিশ এখন ‘পুলিশ লীগ’, এটা স্পষ্ট। বক্তব্য দেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম প্রমুখ।
জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন চায় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট : এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, এই সরকারের অধীনে এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। জনগণ আর কোনো প্রহসনের নির্বাচন হতে দেবে না। নির্বাচন হতে হবে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে। প্রয়োজনে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন করতে হবে। এদিন পুরানা পল্টন মোড় সংলগ্ন আল রাজি কমপ্লেক্সের সামনে এক সমাবেশে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের এই সমন্বয়ক এসব কথা বলেন। ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানকে সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে’ এ কর্মসূচি পালন করে জোটটি।
এনপিপির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন মাইনরিটি জনতা পার্টির চেয়ারম্যান সুকৃতি কুমার মণ্ডল, জাগপার সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এসএম শাহাদাত, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ডা. সৈয়দ নুরুল ইসলাম, বিকল্পধারার মহাসচিব শাহ আহমেদ বাদল, ন্যাপের চেয়ারম্যান এমএন শাওন সাদেকী ও মহাসচিব আব্দুল বারিক প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল হয়। মিছিলটি পল্টন মোড় ও জাতীয় প্রেস ক্লাব হয়ে পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।