তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, পাঁচ মামলায় সাজার রায় মাথায় নিয়ে লন্ডনে বসবাসরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে সাজা কার্যকর করতে ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে ‘আলাপ-আলোচনা চলছে’।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, এ ব্যাপারে আমরা ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আলাপ চলমান আছে।
তারেক-জোবাইদার কারাদণ্ডের রায়ে সারা দেশে প্রতিবাদ সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। এ বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, এ মামলা কিন্তু আমাদের সরকার দেয়নি। এ মামলা করেছে তাদের পছন্দের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৭ সালে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ তারেক রহমানের ওপর প্রতিহিংসাপরায়ণ হলে দলের পক্ষ থেকেই মামলা করা হতো। সরকার যদি স্বপ্রণোদিত হয়ে কোনো কিছু করত, তা হলে এ মামলার রায় হওয়ার জন্য তো সাড়ে ১৪ বছর অপেক্ষা করতে হতো না।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন তো এর আগেও দুটো হয়েছে, আমরা ক্ষমতায় থাকাকালে। এটার সঙ্গে নির্বাচনের তো কোনো সম্পর্ক নেই, আমাদের সরকার প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে মোটেই করেনি। স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বিচার হয়েছে, বিচারের রায় হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, আসলে আইন, আদালত কোনো কিছুর ওপর তাদের (বিএনপি) আস্থা নেই এবং কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা করে না। শুধু ক্ষণে ক্ষণে বিদেশিদের কাছে যায়, আমরা বিদেশিদের কাছে যাই না, বিদেশিরা প্রয়োজনে আমাদের কাছে আসে।
ঘোষিত আয়ের বাইরে সম্পদের মালিক হওয়ার দায়ে তারেক রহমানকে ৯ বছরের কারাদণ্ড এবং তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার ঘোষিত ওই রায়ে দুজনকে জরিমানা করার পাশাপাশি তাদের অপ্রদর্শিত আয়ের পৌনে তিন কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করারও আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এই মামলাটি হয় ২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে। তখন তারেক গ্রেফতার হয়েছিলেন।
২০০৮ সালে তারেক রহমান জামিনে মুক্তি পেয়ে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে যান চিকিৎসার জন্য। এর পর তিনি আর দেশে ফেরেননি। প্রবাসে থেকেই বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন তিনি, মা কারাগারে যাওয়ার পর থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পদে অধিষ্ঠিত হন তিনি।
তারেক রহমান বিদেশে থাকাবস্থায়ই এর আগে চারটি মামলায় তার বিরুদ্ধে সাজার রায় আসে। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগে দুই বছর, অর্থপাচারের দায়ে সাত বছর, জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছর এবং একুশে আগস্টের গ্রেনেড মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হয় তার।