ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

বিএনপির কর্মসূচিতে পুলিশি ভূমিকা নিয়ে যা বলল বিদেশি গণমাধ্যম

ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: রবিবার, জুলাই ৩০, ২০২৩

বিএনপির কর্মসূচিতে পুলিশি ভূমিকা নিয়ে যা বলল বিদেশি গণমাধ্যম
বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ইটপাটকেল নিক্ষেপের জবাবে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে পুলিশ। শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবিতে রাজধানী ঢাকার প্রধান প্রধান প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে এ ঘটনা ঘটে। 

পুলিশ বলেছে, এ সময়ে বিএনপির সমর্থকরা বাসে আগুন দিয়েছে এবং পেট্রল বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। 

অন্যদিকে বিএনপির দাবি— প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে এবং আগামী নির্বাচন হতে হবে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। 

দুর্নীতির অভিযোগে দলটির নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালে জেল দেওয়ার পর গত কয়েক মাসে বিএনপি সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করেছে শুক্রবার। এ বিক্ষোভে অংশ নেন লাখো জনতা। সেখান থেকেই শনিবার ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করে। বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে এসব কথা লিখেছে বিদেশি মিডিয়া। এর মধ্যে আছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স, আলজাজিরা, আনাদোলু। 

আলজাজিরা লিখেছে— বিএনপি শনিবার বলেছে, তাদের কয়েক ডজন সমর্থক আহত হয়েছেন এদিন। অন্যদিকে পুলিশ বলেছে, তাদের কমপক্ষে ২০ সদস্য সংঘর্ষে আহত হয়েছে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ৯০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওদিকে বিএনপির দুজন সিনিয়র নেতাকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। 

অন্যদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র ফারুক আহমেদ বলেছেন, কোনো কারণ ছাড়াই পুলিশ বাহিনীর ওপর হামলা চালানো হয়েছে। তারা শুধু যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছিলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়তে হয়েছে। টিভি ফুটেজে দেখা গেছে, রাজপথে বিক্ষোভকারীদের প্রহার করতে লাঠি ব্যবহার করছে পুলিশ। 

ঢাকা থেকে আলজাজিরার সাংবাদিক জানিয়েছেন, রাজপথে উত্তেজনা ছিল তীব্র। নাগরিকরা আরও সহিংসতার ভয়ে আতঙ্কিত। আজ রোববার পাল্টা বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে সোমবার আরও কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিরোধী দল। গড়পরতা মানুষের জন্য খাদ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। তাদের সক্ষমতা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এ জন্য জনগণের মধ্যে অসন্তোষ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিক্ষোভকারীরা ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে কারচুপির প্রসঙ্গ সামনে এনেছেন। 

সরকারবিরোধী বিক্ষোভে সরকারের দমনপীড়নের সমালোচনা করেছে পশ্চিমা দেশগুলো এবং অধিকারবিষয়ক সংগঠনগুলো। অ্যামনেস্টি ইনটারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক আঞ্চলিক ক্যাম্পেইনার ইয়াসাসমিন কাভিরত্নে এ মাসের শুরুতে বলেছেন, বাংলাদেশে উত্তেজনা যেভাবে বাড়ছে তা অ্যালার্মিং। জনগণকে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করতে এবং ভিন্নমত প্রকাশ করার অনুমতি দেওয়া উচিত। তাদের কণ্ঠকে চেপে ধরে সরকার এই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, দেশের ভেতর ভিন্ন রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিকে সহ্য করা হবে না। তিনি পুলিশকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। 

অন্যদিকে আনাদোলু লিখেছে, শনিবার প্রধান বিরোধী দল দাবি করেছে পুলিশ তাদের কমপক্ষে একশত নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। আহত করেছে অনেককে। তাদের দিকে ছোড়া হয়েছে বুলেট। পুলিশের একটি ও তিনটি বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকটি প্রাইভেটকার ভাঙচুর করা হয়েছে। এর জন্য ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধীরা একে অন্যকে দায়ী করছে।

এতে আরও বলা হয়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠানের দাবিতে আন্দোলন করছে বিএনপি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল ভিডিও এবং টেলিভিশনে প্রচারিত ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ঢাকার বিক্ষোভে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে লাঠিপেটা করছে পুলিশ। তার পর তাকে আটক করেছে। পরে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। 

গত দুটি নির্বাচন ব্যাপক জালিয়াতি এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীনভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ায় একটি অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশের ওপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা। বৃহস্পতিবার মার্কিন কংগ্রেসের ১৪ জন কংগ্রেসম্যান জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের কাছে চিঠি লিখেছেন। তাতে জাতিসংঘের অধীনে এবং নির্দলীয় ব্যবস্থায় বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানানো হয়েছে।