শান্তি সমাবেশ শেষে ফেরার পথে গুলিস্তানে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতের পরিচয় জানা যায়নি। আহতদের মধ্যে যুবলীগ কর্মী, দিনমজুর ও পথচারী রয়েছেন।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে গুলিস্তান গোলাপ শাহ মাজারের পাশে রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানার যুবলীগ কর্মী নোমান হোসেন রনি (৩২), দিনমজুর মোবাশ্বের (২৩), রাজমিস্ত্রি আরিফুল ইসলাম (১৮) ও স্কুলশিক্ষার্থী মো. জুবায়ের হোসেন (১৬)।
ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) হায়াতুল ইসলাম খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ হয়েছে। আমরা কয়েকজনকে আহত পেয়েছি। একজন নিহত হয়েছেন বলে শুনেছি।’
এর আগে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে শান্তি সমাবেশ করে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম তিন সংগঠন।
আহত অন্তত চারজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আহতের মধ্যে দুজন রাজমিস্ত্রির কাজ করেন, একজন ছাত্র এবং একজন যুবলীগ কর্মী।
আহতদের সঙ্গে আসা লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেরানীগঞ্জের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলামের অনুসারী ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন খানের অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। এর সূত্রপাত হয়েছিল সমাবেশ চলার সময়ই।
ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রনির সঙ্গে থাকা কেরানীগঞ্জ মডেল থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক পরিচয় দেওয়া সৈকত হাসান বিপ্লব জানান, তাঁরা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহিন আহমেদের সমর্থক। নেতা-কর্মী নিয়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন। সমাবেশ শেষে কেরানীগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হন। গুলিস্তান গোলাপ শাহ মাজারের পশ্চিম পাশে এলে পেছন থেকে আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল ইসলামের সমর্থকেরা তাঁদের ধাওয়া করেন। একপর্যায়ে পেছন থেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করেন।
বিপ্লব আরও জানান, সমাবেশ চলাকালেই কামরুল ইসলামের সমর্থক ও নেতা-কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছিল।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, নিহত যুবকের বাঁ পায়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। বাকি চারজনের অবস্থাও গুরুতর। তাঁদের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সংঘর্ষের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমিও শুনছি আর কী। মিটিং শেষ করে একসঙ্গে আসলাম, এরপর শুনছি এই ঘটনা। কেউই কিছু বলতে পারে না।’
কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠালেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।