ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

১২তম আন্তর্জাতিক এইডস সম্মেলন: গবেষণায় চাঞ্চল্যকর ফল

বিশ্ব বাংলা ডেস্ক | আপডেট: শনিবার, জুলাই ২৯, ২০২৩

১২তম আন্তর্জাতিক এইডস সম্মেলন: গবেষণায় চাঞ্চল্যকর ফল
আটটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে পর্দা নামল ১২তম বিশ্ব এইডস বিজ্ঞান সম্মেলনের। ২৩ জুলাই থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেন কনভেনশন অ্যান্ড এক্সিবিউশন সেন্টারে এ সম্মেলনের আয়োজন করে আন্তর্জাতিক এইডস সোসাইটি। 
গত বুধবার সম্মেলনের শেষ দিনে সারা বিশ্ব থেকে বিজ্ঞানীদের গবেষণা ফলাফল থেকে আটটি বিষয়ে একমত হন বিশ্ব স্বাস্থ্য নেতারা। সেই সঙ্গে চাঞ্চল্যকর এসব গবেষণার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে এইডস এখন আর জনস্বাস্থ্য ও ব্যক্তিগত মঙ্গলের জন্য হুমকি নয় বলে মত দেন বিশ্ব নেতারা। 

সম্মেলনে অংশ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রস আধানম ঘেব্রেইসাস বলেছেন, আমরা এখন যে কোনো দেশে এইচআইভি সংক্রমণ নির্মূল করার বিষয়ে কথা বলছি, তা অবিশ্বাস্য। অস্ট্রেলিয়ার সাফল্য এটা প্রমাণ করে যে, আমাদের কাছে বিজ্ঞান, সরঞ্জাম ও জানা আছে কিভাবে সংক্রমণ বন্ধ করা যায় এবং জীবন বাঁচানো যায়। আমরা এখন যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি, তা হলো বিশ্বজুড়ে এর সাফল্য ছড়িয়ে দেওয়া। বিশেষ করে দরিদ্রতম, সবচেয়ে প্রান্তিক এবং সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছানো সবচেয়ে কঠিন। 

সম্মেলনে আন্তর্জাতিক এইডস সোসাইটির ইন্টারন্যাশনাল চেয়ার ও অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পিটার ডোহার্টি ইনস্টিটিউট ফর ইনফেকশন অ্যান্ড ইমিউনিটির পরিচালক শ্যারন লুইন বলেন, এইচআইভি গবেষণায় একটি অবিশ্বাস্যভাবে উত্তেজনাপূর্ণ সময় এখন। এইচআইভিতে বসবাসকারী লোকেদের ওপর এমপক্স এবং কোভিডের প্রভাব কিভাবে কমানো, এইচআইভি নিরাময় অর্জনের জন্য নতুন পদ্ধতিগুলো চিহ্নিত করাসহ নানা বিষয়ে চাঞ্চল্যকর গবেষণা লব্দ ফল পাওয়া গেছে। যার মাধ্যমে বলতে পারি এইচআইভি আর জনস্বাস্থ্য এবং ব্যক্তিগত মঙ্গলের জন্য হুমকি নয়। এখন শুধু সারা পৃথিবীতে তা কাজে লাগাতে হবে।  

গত রোববার থেকে শুরু হওয়া আন্তর্জাতিক এইডস বিজ্ঞান সম্মেলনে সারা পৃথিবী থেকে ৫ হাজার মানুষ সশরীরে ও ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। এদের মধ্যে ১৪শ গবেষণার সারাংশ উপস্থাপিত হয়। 

এসব গবেষণা থেকে যে আটটি বিষয় সবাইকে নাড়া দেয় এবং যা এবারের সম্মেলনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হয় তা হলো- জেনেভা রোগীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় যিনি স্টেম সেল ট্রান্সপ্লান্টের মাধ্যমে এইচআইভির নিরাময় হিসেবে বিবেচিত ষষ্ঠ ব্যক্তি। এইডস আক্রান্ত রোগীদের একটি ওষুধ সেবনের ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৩৫ শতাংশ কমে যাওয়া, নির্ধারিত ওষুধ সেবনের ফলে এইডস আক্রান্ত রোগীদের যৌন সঙ্গীদের সংক্রমণের ঝুঁকি শূন্য, সহজাত ইমিউন লিঙ্গের পার্থক্যের কারণে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের টেকসই এইচআইভি মওকুফের ভালো সুযোগ থাকতে পারে। 

সম্মেলনে সপ্তম চাঞ্চল্যকর প্রাপ্তি সিডনির অভ্যন্তরীণ-শহর এলাকাটি বিশ্বের প্রথম এলাকা; যা কার্যত এইচআইভি সংক্রমণ নির্মূল করে (এটি শূন্য সংক্রমণ নয়, স্থায়ী স্থানীয় সম্প্রদায়ের সংক্রমণের অনুপস্থিতিকে বোঝায়)। এলাকাটি ৮৮ শতাংশ দ্বারা নতুন সংক্রমন হ্রাস করেছে এবং যা জাতিসংঘের এইডস লক্ষ্যগুলোর সহজ নাগালের মধ্যে রয়েছে। 

সবশেষ যে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয় তা হলো- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকাশিত বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ভ্যাকসিন দেওয়ার পরও এইডস আক্রান্ত রোগীদের কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুহার খুব কমেনি। যেখানে সাধারণ মানুষের মৃত্যুহার আশ্চর্যজনকভাবে কমে গেছে। তাই বিশ্বব্যাপী এইডস আক্রান্তদের বুস্টার ডোজ প্রদানের আহবান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।