পৃথিবীর সকল স্থলভাগ জুড়ে গিয়ে তৈরি হতে যাচ্ছে একটাই সুপার মহাদেশ। সম্প্রতি প্রকাশিত ভূপদার্থবিদ রস মিচেলের লেখা ‘দ্যা নেক্সট সুপারকন্টিনেন্ট’ নামের বইয়ে পৃথিবীর সব মহাদেশ মিলেমিশে এক হয়ে যাওয়ার তথ্যটি উল্লেখ করা হয়েছে।
পৃথিবীর বর্তমান সাত মহাদেশ একসঙ্গে জুড়ে গেলে বিশ্ব মানচিত্রের আকার কেমন হতে পারে তারও বর্ননা দিয়েছেন মিচেল। দ্য ইকোনোমিক টাইমস।
মিচেলের বই অনুযায়ী, একটি স্থলভাগ তৈরি ও তা ভেঙে যাওয়া নির্ভর করে ভূত্বকের আচরণের উপর। নমনীয় এই ভূত্বকের বৈজ্ঞানিক নাম ম্যান্টল। এর কাজ পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে নির্গত হওয়া তাপ সঞ্চয় করে রাখা।
মিচেলের দাবি, তাপ সঞ্চয় করতে করতে ম্যান্টলের উষ্ণতা বেড়ে গেলে তার উপরিভাগের মহাদেশগুলো একটু একটু করে সরতে শুরু করে। এগুলো সরে গিয়ে তুলনামূলকভাবে শীতল ম্যান্টলের দিকে আগায়। আর এই শীতল ম্যান্টেলগুলোর অবস্থান আরও উচ্ছল মহাসাগরীয় প্লেটগুলোর কাছাকাছি। আর এভাবেই উচ্ছল সাগর ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে মহাদেশগুলোকে আরও কাছাকাছি নিয়ে আসবে। আর এরপরই সংঘর্ষ হয়ে একটি তৈরি হবে একটি নতুন সুপারমহাদেশ ।
মহাদেশ ভেঙে যাওয়া অথবা জোড়া লাগার ঘটনা চক্রাকারে ঘটতে পারে। একসময় সসুপারসহাদেশের অভ্যন্তরে কোথাও কোথাও গরম ম্যান্টেল বেড়ে যেতে পারে। গরম ম্যান্টেল তৈরি হলে সুপারমহাদেশ ভেঙে গিয়ে আবার তৈরি হতে পারে নতুন নতুন মহাসাগর।
একটি সুপার মহাদেশ বিচ্ছিন্ন হওয়ার বিষয় প্রমাণে গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেছেন ভূবিজ্ঞানীরা। এব্যাপারে পাথরের গঠন ও বয়স নির্ধারণ অথবা অথবা মহাদেশগুলোর চলমান অবস্থার স্বরূপ বিশ্লেষণ করেছেন তারা।
ভূবিজ্ঞানীদের মতে, পৃথিবীর স্থলভাগ চলমান। উদাহরণ হিসেবে প্রায় এক বিলিয়ান বছর আগে উত্তর আমেরিকা ও গ্রিনল্যান্ডের স্থলভাগ সংযুক্ত থাকার কথা উল্লেখ করেছেন তারা। পরস্পর সংযুক্ত কলম্বিয়া ও সাইবেরিয়াও প্রায় দুই বিলিয়ান বছর আগে আলাদা হয়।
প্রায় ৩০০ থেকে ২০০ মিলিয়ান বছর আগে পৃথিবী পৃষ্ঠের স্থলভাগের গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়। বিজ্ঞানীদের দাবি, পৃথিবীর উপরি পৃষ্ঠ তৈরির সময় আফ্রিকাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা একটিমাত্র স্থলভাগ ছিল।
মিচেলের মতে, প্রাগৈতিহাসিক যুগের সেই স্থলভাগে রাজত্ব করত অতিকায় ডাইনোসর। কিন্তু পরবর্তীকালে তা ভাগ হয়ে বিশ্বের সাত মহাদেশ তৈরি হয়।