ভিসা না পাওয়ায় কানাডায় যেতে পারেননি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির এক প্রোগ্রামে যোগ দিতে গত ১৫ জুন ভিসার জন্য ঢাকার কানাডিয়ান হাইকমিশনে আবেদন করেন তিনি। কিন্তু এক মাস পার হলেও ভিসা পাননি ভিসি। তাই কানাডায় যাওয়ার উদ্যোগ বাতিল করতে হয়েছে ঢাবি ভিসিকে। বর্তমানে এ বিষয়টি ‘টক অব দ্য কান্ট্রিতে’ পরিণত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে এ বিষয়ে কথা বলেছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। সেখানে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আখতারুজ্জামান কিন্তু কূটনৈতিক পাসপোর্টধারী। পদাধিকার বলে তিনি কূটনৈতিক পাসপোর্ট পান। তারপরও তার ভিসা আবেদন নাকচ করে দিয়েছে কানাডা দূতাবাস।
রুমিন ফারহানা বলেন, ভিসা না পাওয়ার বিষয়ে ভিসি বলেছেন, যথেষ্ট সময় নিয়ে আবেদন করা হয়নি। তিন মাস সময় নাকি ভিসা পেতে লাগে। এ জন্য তার ভিসা নাকচ করে দিয়েছে। এটি খুবই হাস্যকর।
রুমিন ফারহানা বলেন, সাধারণ জনগণও যদি কানাডা ভিসার জন্য আবেদন করে তা হলে কারও তিন মাস সময় লাগবে না। কারও দুই মাস লেগেছে বলে আমার মনে হয় না। তার আগেই হয়েছে। তবে এক সপ্তাহ থেকে দুই সপ্তাহ লাগে তাদের প্রসেস করতে। কিন্তু দুই মাস না। আর কোনো কনফারেন্স হলে সপ্তাহখানেকের মধ্যে ভিসা দিয়ে দেয় দূতাবাস।
নিজের অতীত অভিজ্ঞতা তুলে ধরে রুমিন ফারহানা বলেন, ব্যারিস্টারি পাশ করে দেশে আসার পর আইনজীবী হিসেবেও জুনিয়র ছিলাম। তখন আমি কানাডা যাওয়ার জন্য ভিসা আবেদন করেছিলাম দূতাবাসে। মাত্র ৭ দিনের মাথায় দূতাবাস থেকে ভিসা দিয়েছিল। এটি ১৩ বছর আগের ঘটনা।
এর পর রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পর আমাকে বহুবার ওয়াশিংটন ও আমেরিকায় যেতে হয়েছে । তবে আমেরিকার ভিসা পেতে ১৫ দিনের বেশি সময় লাগেনি। তবে যখন কোনো কনফারেন্সে যোগ দিয়েছি ইনভাইটেশন লেটার এটাচ করে দিলে আরও দ্রুত ভিসা দিয়ে দেয়। তা ছাড়া চিঠিতে উল্লিখিত নির্ধারিত তারিখের ৭ দিন আগেই ভিসা দিয়ে দেয়।
ঢাবি ভিসির প্রসঙ্গ টেনে রুমিন ফারহানা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি একজন সহজ সরল মানুষ। সহজ সরল বলছি এ জন্য যে, যখন বুদ্ধিজীবী সমাজ, শিক্ষক সমাজ, নাগরিক সমাজ যেই সরকারের বিপক্ষে যায় না কেন খুবই সোচ্চার, তারা একেবারে গর্তের নিচে চলে গেছেন। যখন মার্কিন ভিসানীতি দিলেন, সেই সময়ে তিনি আওয়াজ তুলে ছিলেন ভিসানীতির বিরুদ্ধে। ভিসানীতি নিয়ে কথা বলেছিলেন ঢাবি ভিসি।
তিনি বলেছিলেন, আগামী নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি দিয়েছে। দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে এ ভিসানীতি দেওয়া হয়েছে।
অথচ এ নিয়ে কথা বলার কথা ছিল ড. জাফর ইকবালের। কিন্তু তিনি কোনো এ বিষয়ে কথা বলেননি।
কানাডার ভিসানীতিতে কী বলা হয়েছে, নিজের দেশের জন্য ক্ষতিকর এমন কোনো ব্যক্তিকে ভিসা দেয় না কানাডা। জঙ্গিবাদ, মানবাধিকার লঙ্ঘন জড়িত তাদের ভিসা দেবে না। তাদের আরেকটি পলিসি— তারা নিষেধাজ্ঞা দেবে না, আবারও ভিসাও দেবে না।