সবার চোখ ভারতের ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে। বিজেপিবিরোধী শক্তিতে পড়ছে শান।
এর অংশ হিসেবে বেঙ্গালুরুতে হতে যাচ্ছে বিরোধী দলগুলোর বৈঠক।
মোদিবিরোধী ২৪ দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে কংগ্রেস। জানা যাচ্ছে, বৈঠকের আগের রাতে বিশেষ নৈশভোজের আয়োজনও করেছেন কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী।
সম্প্রতি কেন্দ্রের মোদি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াইয়ের ডাক দেয় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো, যা নিয়ে চলতি বছরের ২৩ জুন বিহার রাজ্যের পাটনায় একপ্রস্ত বৈঠকও হয়ে গেছে।
সেই বৈঠকে ছিলেন সমাজবাদী পার্টি প্রধান অখিলেশ যাদব থেকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার, রাহুল গান্ধীসহ মোট ১৭টি রাজনৈতিক দলের প্রধানরা। তবে সেই বৈঠকে ছিলেন না কংগ্রেসের সাবেক সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী।
আগামী ১৭-১৮ জুলাই বেঙ্গালুরুতে বিরোধীদের ডাকা বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা সোনিয়া ও রাহুল গান্ধীর। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইতে আম আদমি পার্টিকেও (আপ) পাশে চাইছে কংগ্রেস। তাই আলাদা করে আপের প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছে দলটি।
সম্প্রতি দিল্লির আমলাদের নিয়োগ ও বদলি নিয়ে কেজরিওয়াল সরকারের হাত থেকে ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া সংক্রান্ত কেন্দ্রের অর্ডিন্যান্স নিয়ে যে বিরোধ শুরু হয়েছে, তাতে সব বিরোধী দলকে পাশে চেয়েছিল আমআদমি পার্টি। তাতে তৃণমূল কংগ্রেসসহ একাধিক বিরোধী দল সমর্থন জানালেও, বেঁকে বসেছিল কংগ্রেস।
তারা জানিয়েছিল, এটা সংসদে আলোচ্য বিষয়। অধিবেশন শুরুর সময়ই এই বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে না। এরপরই আপ-কংগ্রেসের বিরোধ শুরু হয়। তখন থেকেই জল্পনা রয়েছে বিরোধী জোটের পরবর্তী বৈঠকে হয়তো আমআদমি পার্টি শামিল হবে না। তাই আপকে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে দাওয়াত দিয়েছেন সোনিয়া।
এবারে আপের পাশাপাশি নতুন তালিকায় রয়েছে, ভারতের তামিলনাড়ু ও পুদুচেরি রাজ্যে সক্রিয় রাজনৈতিক দল মারুমালর্চি দ্রাবিড় মুনেত্র কাজগম’ (এমডিএমকে), তামিলনাড়ু রাজ্যের দ্রাবিড় মুনেত্র কাজগম (কেডিএমকে), তামিলনাড়ু রাজ্যের সক্রিয় জাত-ভিত্তিক রাজনৈতিক দল বিদুথালাই চিরুথাইগল কাচি (ভিসিকে), বামফ্রন্ট জোটের আরএপি (বিপ্লবী সমাজতান্ত্রিক দল) অল ইন্ডিয়া ফরোয়ার্ড ব্লক ও কেরালা কংগ্রেস।
গত বৈঠকে ঠিক হয়েছিল প্রথমে হিমাচল প্রদেশের সিমলায় এই বৈঠক হবে। তবে খারাপ আবহাওয়ার কারণে সেই বৈঠকের স্থান বদল করে বেঙ্গালুরুতে স্থির করা হয়েছে। গত বৈঠকে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জনতা দল ইউনাইডের (জেডিইউ) প্রধান নেতা নীতিশ কুমার। এবার বিরোধী জোটের বৈঠকের দায়িত্ব তাকেই দেওয়া হয়েছে।
গত ২৩ জুন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার পাটনায় ১৭ বিরোধী দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। বৈঠক শেষে সেদিন নেতাদের যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আজকের বৈঠক খুবই গুরুত্বপূর্ণ রূপ নিয়েছে।
তিনি বলেন, বৈঠকে চারটি বিষয়ে আমরা সহমত হয়েছি। তা হলো, আমরা সবাই একত্রে আছি। দুই, লোকসভা ভোটে আমরা জোট বেঁধে লড়াই করব। তিন, কেন্দ্রের মোদি সরকারের কালা আইন প্রয়োগ এবং অ-বিজেপিবিরোধী শাসিত রাজ্যগুলির ওপর দমনপীড়নের ঘটনায় আমরা সবাই এক জোট হয়ে লড়াই কবব। চার, পরের বৈঠক আগামী মাসে সিমলায় হবে।
কিন্তু, এবার খারাপ আবহাওয়ার কারণে সিমলার বদলে আগামী ১৭-১৮ জুলাই বেঙ্গালুরুতে হতে চলেছে সেই বৈঠক। এখন দেখার বিষয় সোনিয়ার ডাকে বিজেপিবিরোধী বৈঠকে কতটি দল হাজির থাকে। সেই দিকেই তাকিয়ে ভারতের রাজনৈতিক মহল।