এখন আর ভয় দেখিয়ে লাভ নেই এমন হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভয় করেও লাভ নেই। অস্তিত্বের কারণে বাঁচার কারণে সকল বাঁধা অতিক্রম করে ল আমাদেরকে বেরিয়ে আসতে হবে।
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ডিইউজে দ্বি বার্ষিক উদ্ধবনী অধিবেশনের সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে এখন স্বাধীন সাংবাদিকতা বলতে কিছু নেই। এতদিন যে একটা কথা বলছি সে কথা কাজে লাগেনি তাই না, কথা কাজে লেগেছে। অবশেষে একটা জায়গায় আসা গেছে। আগে আমরা যারা ভুক্তভোগী ছিলাম তারাই শুধু চিৎকার করতাম। সাংবাদিকরা অনেক ভুক্তভোগী। তাদের কিছু লেখা ছাপা হতো, কিছু লেখা ছাপা হতো না। আজকে সমগ্র বিষয়ে কথা স্বীকার করেছে যে বাংলাদেশের স্বাধীন সাংবাদিকতার কোন জায়গা নেই।
তিনি বলেন, তখনই আমাদেরকে কষ্ট দেয় পীড়া দেয় যখন দেখি আপনাদের (সাংবাদিক) কিছু সহযোগী সহকর্মীরা যারা অবহেলায়, অবলীয়ায় সাংবাদিকদের দমনকে সমর্থন করে। এটা সত্য কথা, প্রতিবাদ না করলে, রুখে না দাঁড়ালে, সোচ্চার না হলে, কোন দাবি আদায় করা যায় না।
যদি আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকে তবে দেশের মানুষ তার মত প্রকাশ করতে পারবে না এমন মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এরা থাকলে জনগণ তার ভোটের অধিকার ফিরে পাবে না, তার ভোট দিতে পারবে না। এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। এটা শুধু আমার কথা না । এটা প্রত্যেক প্রত্যেকের কথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান সরকার নির্বাচন অধীনে কখনই গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু হবে না।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের অনেকেই আনন্দ পাচ্ছেন। তারা বলছেন ভিসা নীতিতে তো অংশগ্রহণ নির্বাচনের কথা বলেনি, এটাও অনেকে বলছেন। কি মজা! কি অদ্ভুত যুক্তি! তাদের কি আনন্দ হচ্ছে , তারা বলছে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে কথা বলা হয়নি। অথচ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ছাড়া আমাদের সংবিধানই গ্রহণযোগ্য হবে না। এদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে। এদেরকে পরাজিত করতে হবে।
"আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের সাথে প্রতারণা করে, ভ্রান্ত তথ্য দিয়ে তাদেরকে পরিচালনা করতে চায়। এনাফ ইজ এনাফ। অনেক হয়েছে। মানুষকে অনেক বোকা বানিয়েছেন।"
৫০-৫২ বছর পর একটা বিস্ময়কর ব্যাপারে হয়ে দাঁড়িয়ে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে নাকি বেশি রেমিটেন্স আসছে। কিন্তু আমেরিকায় যারা বাস করে তারা কখনোই দেশে এসে লগ্নি করে না। বিনিয়োগ করে না। দরকার হলে তারা এখানকার বাড়িঘর বিক্রি করে দিয়ে যায়। এখন নাকি ফিরে আসছে রে! কেন ? যারা চুরি করেছে। যারা হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। সেইগুলো আবার দেশে রেমিটেন্স করে নিয়ে আসছে তারা। আবার তাদেরকে আড়াই পার্সেন্ট ইন্সেন্টিপ দেয়ার ঘোষনা দেয়া হচ্ছে।
আবার শুরু হয়ে যাচ্ছে সেই পুরনো খেলা এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, পুরাতন খেলা কি? বেশি লাফাচ্ছ, তারা আমাদের বিরুদ্ধে যত মামলা আছে তা দ্রুত শেষ করবো। যে মামলাগুলো চালু হয়েছিল সেই তথাকথিত ১/১১ সরকারের সময়। তারা তাদের মামলাগুলো সব তুলে নিয়ে গেছে, খারিজ করেছে। আর বিরোধী দলের মামলাগুলো রেখে দিয়েছে। সেই মামলায় আমাদেরকে এখন সাজা দেওয়া হচ্ছে। এটার একটা সীমা থাকে।
এখন আর ভয় দেখিয়ে লাভ নেই এমন হুশিয়ারী উচ্চারণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ভয় করেও লাভ নেই। অস্তিত্বের কারণে বাঁচার কারণে এখন আমাদেরকে বেরিয়ে আসতে হবে। ভয়কে জয় করে, এদেরকে পরাজিত করতে হবে। দেশি সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। যেখানে সাংবাদিক লিখতে পারবে। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন থাকবে না। যেখানে মিথ্যা মামলা দিয়ে আপনাদেরকে আটক করা হবে না।
ডিইউজের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরীর সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন, জামায়াত নেতা আব্দুল হালিম, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমীন গাজী, সাংবাদিক নেতা হাই শিকদার, শাহ নেওয়াজ আলী, এম এ আজিজ, কামাল উদ্দিন সবুজ, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, এম এ আব্দুলাহ,শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তব্য দেয়ার পূর্বে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সিনিয়র সদস্যদের সম্মাননা প্রদান করেন।
জেবি