বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আজকে দেশ ভয়ংকর ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশে কথা বলার, সমাবেশ করার ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান করার অধিকার নেই। আমরা শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা জানাতে যাবো তাতেও পুলিশের অনুমতি নিতে হয় যে কতজন যাবো! বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দমনের নামে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান অনুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি গরিব ও অসহায় মানুষের হাতে বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় ওষুধ সামগ্রী বিতরণ করেন। দুপুর ২ টা পর্যন্ত এই ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪২তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. মেহেদী হাসানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, ডা. রফিকুল ইসলাম, ড্যাবের মহাসচিব ডা. মো. আবদুস সালাম, ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, ডা. পারভেজ রেজা কাকন প্রমুখ।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, যে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশকে আলো দেখিয়েছেন তার শাহাদাত বার্ষিকী পালন করা নিয়েও সরকার দেশের বিভিন্ন স্থানে তান্ডব চালিয়েছে। গতরাতে মাগুরায় ছাত্রদল, যুবদল নেতাকর্মীদের বাড়িতে হানা দিয়েছে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এভাবে বিএনপিকে দমন পীড়ন ও পিষ্ট করার বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা কারা করে, যে সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই তারা এসব করে।
তিনি বলেন, ড্যাব জাতীয়তাবাদের আদর্শ ধারণ করে মানুষের সেবার ব্রত নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। সারাদেশে ড্যাব সুসংগঠিতভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ড্যাবের ভুমিকা অনস্বীকার্য ও ব্যাপক প্রশংসনীয়। এসব কারণে আজকে অনেক খ্যাতিমান চিকিত্সককে পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। অনেককে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। যারা অধ্যাপক হওয়ার কথা তাদেরকে তা করা হয়নি। বরং যারা অযোগ্য তাদেরকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে।
রিজভী বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মার্কিন ভিসা নীতি নাকি ধনী লোকের জন্য। আরে আপনার এই সরকার গত ১৪ বছরে মানুষের ভোটাধিকার লুট করেছে। গনতন্ত্র হত্যাকারীদের জন্য মার্কিন ভিসানীতি চালু হয়েছে । মানুষের ভোটের অধিকার হরণকারী ও স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসানীতি জারি করেছে। দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ বিভিন্ন আইন দিয়ে দেশে বিরাট কারাগারে দেওয়াল বানিয়েছেন। সুতরাং আজকে আমাদের সংগ্রাম হচ্ছে ফ্যাসিবাদ ও নাৎসীবাদ থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. হারুন আল রশিদ বলেন, আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতা আজ নেই। দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবা আজো নিশ্চিত হয়নি। ওষুধের দাম ও চিকিৎসা ব্যয় মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। শুধু তাই নয় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। পেয়াজের কেজি ৮০ টাকা। আসলে দেশে গণতন্ত্র ও নির্বাচিত সরকার না থাকায় এই নৈরাজ্য দেখা দিয়েছে। শহীদ জিয়াউর রহমানের আদর্শের সরকার গঠন করতে হবে।
জেবি