বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আমেরিকা ঘোষণা দিয়েছে আগামী যারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে যারা বাঁধা দিবে তাদের ভিসা দেয়া হবে না। আর বাঁধা দানকারীরা হলো আওয়ামী লীগ।
শনিবার বিকেলে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে এক প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উচ্চ আদালতের নির্দেশনাকে অধীনস্থ আদালত এবং সরকারের অবজ্ঞা, গায়েবী মামলায় নির্বিচারে গ্রেফতার, মিথ্যা মামলা ও পুলিশি হয়রানী, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, বিদ্যুতের লোডশেডিং, আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং ১০ দফা দাবিতে ঢাকা মহানগর (উত্তর ও দক্ষিণ) বিএনপি'র প্রতিবাদ সভার আয়োজন করা হয়।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, এই সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতা আছে, গায়ের জোরে নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিছে, আমাদের প্রতিটি কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের পেটুয়া বাহিনী বাঁধা দিচ্ছে।
'অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন দেশে আজ প্রত্যাখ্যান হয়েছে। আজ সারা পৃথিবীতে সবাই জেনেছে- শেখ হাসিনার অধীনে একটিও সুষ্ঠু নির্বাচন হয় নাই- অভিযোগ করেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ ভালো করে জানে- জনগণ দিনের বেলায় ভোট দিতে পারলে আওয়ামী লীগের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার অধীনে কোন সুষ্ঠু হওয়ায় সম্ভব নয়, তাই আজ বিদেশিরাও তাই মনে করছে, বিদেশিরা দাবি তুলেছে সুষ্ঠু নির্বাচনের।
'মানুষের ভোটের অধিকার আওয়ামী লীগ হরণ করছে, এদেশের টাকা বিদেশে পাচার করে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এই অর্থনীতি আর মেরামত করা সম্ভব নয়। আজকে গরীব মানুষ না খেয়ে আছে, মধ্যবিত্ত গরীব হয়ে গেছে।'
সিনিয়র এই নেতা বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এদেশে শেখ হাসিনার অধীনে কোন নির্বাচন হবে না, গনতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আন্দোলনরত কোন দল এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে দিবে না।
তিনি আরো বলেন, আমেরিকা ঘোষণা দিয়েছে আগামী যারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে যারা বাঁধা দিবে তাদের ভিসা দেয়া হবে না, আর বাঁধা দানকারীরা হলো আওয়ামী লীগ। এই আওয়ামী লীগের কাছে গণতন্ত্র, দেশ ও জনগণ কোনকিছুই নিরাপদ নয়। এরা উন্নয়নের দোহাই দিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের হাজার কোটি টাকার মালিক বানিয়েছে।
তিনি বলেন, এদেশে গণতন্ত্রকে উদ্ধার করতে হলে গণঅভ্যুত্থানের কোন বিকল্প নেই। আমরা আশাবাদী, জনগণ প্রস্তুত, অচিরেই গণঅভ্যুত্থান শুরু হয়ে যাবে।
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, এই সরকার সারা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, দেশের আকাশ আজ অস্বাভাবিক পরিস্থিতি, ঝড় আসতেছে, এই সরকার উড়ে যাবে। শেখ হাসিনাকে জেল খানায় যেতেই হবেই, কোন রক্ষা নেই। শেখ হাসিনার সূর্য ডুবে গেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আজকে রাজপথে লাখ লাখ যুবক রাস্তায় নেমে এসেছে, এ যুবকদের পদভারে শেখ হাসিনা সরকার বানের জলে ভেসে যাবে। আমার এক পরিচিত সরকারী চাকুরী করা লোককে অস্ট্রেলিয়ার ভিসা দিচ্ছে না, পরে জানতে পারলাম সেই লোক সরকারের অন্যায়ের সাথে জড়িত।
তিনি বলেন, আজ সারা পৃথিবীর মানুষ আপনাদের ভিসা দিচ্ছে না, পৃথিবীর কোন সভ্য দেশ আপনাদের মতো চোর বাটপারদের ভিসা দিবে না, গত ১৪ বছরে আপনাদের সকল অপকর্মের বিচার হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির ইঙ্গিত করে মির্জা আব্বাস বলেন, আপনারা (সরকার) মাইনকার চিপায় পড়ে গেছেন, আপনারদের আর বাঁচা সুযোগ নেই। ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে ধারণ ক্ষমতা ৪ হাজার ২০০, কেরানিগঞ্জে ১৬ হাজারের মতো, সারাদেশে ২ লাখ, আর অপরদিকে শুধু আমাদেরই কর্মী আছে কয়েক লাখ।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, বিএনপি নেতা মীর সরাফত আলী সপু, আজিজুল বারী হেলাল, মহিলা দলের সভানেত্রী মির্জা আফরোজা আব্বাস, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুরো নয়াপল্টন ও এরআশপাশ এলাকায় বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন। সমাবেশে কেন্দ্র করে নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুল পর্যন্ত একটি রাস্তা বন্ধ রাখা হয়।আবহাওয়া বৈরিতার কারণে আড়াইটায় কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা দেরিতে শুরু হয়। নয়াপল্টন এলাকায় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ও সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ।
জেবি