ভারতের দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠ্যসূচি থেকে পাকিস্তানের জাতীয় কবি মুহম্মদ আল্লামা ইকবালকে নিয়ে লেখা একটি অধ্যায় বাদ দেওয়ার প্রস্তাব পাস করেছে। গতকাল শুক্রবার বিশ্বিবদ্যালয়টির একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় প্রস্তাবটি পাস হয়।
একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যদের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ‘মডার্ন ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল থট’ শিরোনামের অধ্যায়টি ব্যাচেলর অব আর্টসের (বিএ) ষষ্ঠ সেমিস্টারের পাঠ্যসূচি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক কাউন্সিলের একজন সদস্য বলেছেন, বিষয়টি এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যনির্বাহী পরিষদের সামনে উপস্থাপন করা হবে। আগামী ৯ জুন বৈঠকের মাধ্যমে কার্যনির্বাহী পরিষদ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১৪তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় স্নাতক কোর্সের ওপর আলোচনার সময় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক যোগেশ সিং বলেছেন, ‘যারা ভারত ভাঙার ভিত্তি তৈরি করেছেন, তাঁদের সিলেবাসে থাকা উচিত নয়।’
উপাচার্যের প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় পাস হয়। সভায় আন্ডারগ্র্যাজুয়েট কারিকুলাম ফ্রেমওয়ার্ক (ইউজিসিএফ) ২০২২-এর অধীনে বিভিন্ন কোর্সের চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ সেমিস্টারের সিলেবাসের জন্য প্রস্তাবটি পাস হয়েছে।
অল্লামা ইকবাল বিখ্যাত দেশাত্মবোধক গান ‘সারে জাহাঁ সে আচ্ছা’র স্রষ্টা। তিনি ১৮৭৭ সালে অবিভক্ত ভারতের শিয়ালকোটে জন্মেছিলেন। বর্তমানে এটি পাকিস্তানের অংশ।
কিংবদন্তিতুল্য এই কবি ভারত-পাকিস্তান উভয় দেশেই সমাদৃত। পাকিস্তান তাঁকে জাতীয় কবির মর্যাদা দিয়েছে। অন্যদিকে পণ্ডিত রবিশঙ্কর ভারতীয় সৈন্যদের জন্য তৈরি করেছিলেন ‘সারে জাহাঁ সে আচ্ছা’র কুচকাওয়াজ সংস্করণের সুর। প্রখ্যাত এই কবি ১৯৩৮ সালে মারা যান। প্রথম জীবনে তিনি উর্দু ভাষায় কবিতা লিখতেন। পরে ফার্সি ভাষায় লেখালেখি করেছেন।
উল্লেখ্য, ভারতের শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ বছর দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস বই থেকে মোগল যুগ বাদ দিয়েছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন ইতিহাসবিদেরা।