সাতটি শিল্পোন্নত দেশ শনিবার চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা হুমকির বিষয়ে নিন্দাকে তীব্রতর করেছে। একই সময়ে তারা রাশিয়াকে তার সামরিক আগ্রাসন বন্ধ করতে এবং ইউক্রেন থেকে সেনা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিতে বেইজিংয়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
হিরোশিমায় জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের একটি বিবৃতিতে— চীনের অর্থনৈতিক বল প্রয়োগ, দক্ষিণ চীন সাগরের সামরিকীকরণ এবং কূটনীতিকদের নিরাপত্তাকে অবমূল্যায়ন ও তাদের কাজে হস্তক্ষেপ, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের নিষ্ঠা এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে অবমূল্যায়নের জন্য সমালোচনা করা হয়েছে।
এ ছাড়া জি-৭ রাশিয়ার অবৈধ আগ্রাসনের মুখে, যতদিন প্রয়োজন হবে ততদিন ইউক্রেনকে সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই গ্রুপ বলেছে, তাদের উদ্যোগগুলো চীনের ক্ষতি করার জন্য বা তার অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং উন্নয়নকে বাধা দেওয়ার জন্য নয়। জি-৭ বেইজিংকে জলবায়ু, ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর ঋণ পুনর্গঠন, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা বিচ্ছিন্ন হচ্ছি না বা অন্তর্মুখী হয়ে যাচ্ছি না। একই সঙ্গে আমরা স্বীকার করি যে স্থিতিশীলতার জন্য অর্থনীতিকে ঝুঁকিমুক্ত ও বৈচিত্র্যময় করা প্রয়োজন। আমরা আমাদের নিজস্ব অর্থনৈতিকে প্রাণবন্ত করতে, আমাদের অর্থনীতিতে এককভাবে এবং সম্মিলিতভাবে পদক্ষেপ নেব। আমরা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ শৃঙ্খলে অত্যধিক নির্ভরশীলতা হ্রাস করব।
জি-৭ পূর্ব ও দক্ষিণ চীন সাগরের পরিস্থিতি নিয়ে পুনরায় উদ্বেগ প্রকাশ করে। এটি ইউক্রেনে সার্বিক, ন্যায্য এবং স্থায়ী শান্তিকে সমর্থন করতে বেইজিংকে উৎসাহিত করে।
যুক্তরাজ্যের কর্নওয়ালে ২০২১ সালের জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের পর, এ বিবৃতিকে বেইজিংয়ের সবচেয়ে কঠোর সমালোচনা হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। সেই সম্মেলনে চীনের কথা প্রথমবারের মতো উল্লেখ করা হয়েছিল। তুলনামূলকভাবে মৃদু ভাষায় এক শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান এবং তাইওয়ানে স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের একতরফা প্রচেষ্টার বিরোধিতা করা হয় বিবৃতিতে। তবে জি-৭ সদস্যদের মধ্যে একটি সমঝোতার ভাবও দেখা গেছে; কেউ কেউ এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আলোচনায় অস্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।এদের মধ্যে রয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
বেইজিং থেকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন শুক্রবার এই উদ্যোগের বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, “জি-সেভেন শীর্ষ সম্মেলন যদি অর্থনৈতিক বলপ্রয়োগ নিয়ে আলোচনা করতে চায়, তবে যুক্তরাষ্ট্র অন্য ছয় সদস্যকে যেভাবে বল প্রয়োগ করছে তা আগে আলোচিত হতে হবে।