করদাতার আয়কর রিটার্নের ‘গোপন তথ্য’ নিয়ে মুখোমুখি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে প্রায়ই এনবিআরের কাছে তথ্য চায় দুদক। কিন্তু আইনের বিধিনিষেধের কথা উল্লেখ করে তথ্য দিতে অপারগতা জানায় এনবিআর। এ নিয়ে বিরোধেও জড়িয়ে পড়ছেন দুই সংস্থার মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে দুজন করদাতার আয়কর নথি ও সম্পদ বিবরণী চেয়ে গত মার্চে চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপকর কমিশনারকে চিঠি দেন দুদক জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক। আইনী বিধিনিষেধের কারণে তথ্য দিতে অপারগতা জানিয়ে দুদক কর্মকর্তাকে জবাব দেন কর কর্মকর্তা। তথ্য না পেয়ে দুদক কর্মকর্তা এপ্রিলে আবারও কর অফিসে চিঠি দেন। এ পরিস্থিতিতে দিকনির্দেশনা চেয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে চিঠি দিয়েছেন রাজশাহীর কর কমিশনার।
সাবেক কর কমিশনার বজলুল কবির ভূঞা এ বিষয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক আইনের অনুসরণ, বিদেশি বিনিয়োগ, রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে করদাতার তথ্য গোপন রাখতে হয়।
তবে দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম জানান, দুদক আইন আয়কর অধ্যাদেশের পরে হওয়ায় দুদকের আইনই প্রাধান্য পাবে। এছাড়া দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে যেকোনো সংস্থা দুদককে তথ্য দিতে বাধ্য।
এনবিআর কর্মকর্তাদের দাবি, করদাতার তথ্য অন্য কারো কাছে প্রকাশ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। আয়কর অধ্যাদেশের একশ ৬৮ ধারায় যার সুস্পষ্ট বিবরণ রয়েছে।
এর আগে, ২০১৯ সালে দুদকের তৎকালীন পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ একজন করদাতার তথ্য চেয়ে চিঠি দেন। কর অফিসের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে তখন একটি আদেশ জারি করে এনবিআর। আদেশে বলা হয়, আয়কর অধ্যাদেশ, পেনাল কোড ও ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন আইন অনুযায়ী, তদন্ত পর্যায়ে করদাতার তথ্য কোনো সংস্থাকে দেওয়ার সুযোগ নেই। সেই থেকে এনবিআরের এই আদেশ উল্লেখ করে দুদক কর্মকর্তাদের জবাব দিচ্ছেন কর কর্মকর্তারা। তবে অনেক ক্ষেত্রে দুদক কর্মকর্তারা সন্তুষ্ট না হয়ে বারবার তাগাদা দিতে থাকেন। এভাবে ব্যক্তিগত বিরোধেও জড়িয়ে যান অনেকে।