তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমাদের সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে এবং তা অব্যাহত রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর। আমরা মনে করি, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সঙ্গে রাষ্ট্রের বিকাশ, গণতন্ত্রের বিকাশ যুক্ত। গণতান্ত্রিক রীতিনীতি চর্চার আমাদের যে সংস্কৃতি সেটিকে আরও গভীরে প্রোথিত করা নির্ভর করে গণমাধ্যমের ওপর। একইসঙ্গে আমাদের সম্মিলিত দায়িত্বশীলতাও রয়েছে।
তিনি বলেন, অব্যাহতভাবে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, দারিদ্র্য কমছে, প্রতিটি মানুষের জীবনে সচ্ছলতা এসেছে। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশের এই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অনেকের পছন্দ হচ্ছে না। সেজন্য দেখা যায়, কিছু কিছু পত্রিকায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নেগেটিভ রিপোর্ট করা হয়।
শুক্রবার নগরীর দেওয়ানজী পুকুর পাড়ের বাসায় বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম, দক্ষিণ জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানত এবং জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সফর আলী।
হাছান মাহমুদ বলেন, কূটনীতিকদের আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো সমীচীন নয়। প্রয়োজনে কূটনীতিকদের আচরণ সম্পর্কিত ভিয়েনা কনভেনশন তাদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে। আমাদের এখন বাজেটের জন্য ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে কারও দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াতে হয় না, বরং আমাদের সাহায্য করার জন্য তারা অর্থের ঝুলি নিয়ে আমাদের কাছে আসে এখন। আমাদের খাটো করার সময় চলে গেছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকে করোনা মহামারি এবং বিশ্ব মন্দা পরিস্থিতির মধ্যেও দেশ যেভাবে এগিয়ে চলেছে, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি যেভাবে অব্যাহত রয়েছে, তা পৃথিবীর বিভিন্ন পত্রপত্রিকা প্রশংসা করছে। সম্প্রতি ব্লুমবার্গ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, সেখানে তারা বলেছে, করোনার মধ্যেও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার কারণে আগামী নির্বাচনেও শেখ হাসিনার জয়লাভের সম্ভাবনা রয়েছে এবং তিনি চতুর্থ মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন।
কূটনীতিকদের সম্মানে ইফতারে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে কূটনীতিকদের সহায়তা কামনা করেছেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা তো প্রথম থেকেই বলে আসছি তারা জনগণের কাছে যায় না, তারা বিদেশি কূটনীতিকদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে পদলেহন করে। আমি আশা করেছিলাম তারা দুস্থ মানুষের সঙ্গে ইফতার করবে, সেটি না করে পাঁচ তারকা হোটেলে বসে কূটনীতিকদের সঙ্গে ইফতার করেছে। সেখানে গিয়ে আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের জন্য অনুনয়-বিনয় করেছে। আসলে দোষটা কূটনীতিকদের চেয়েও আমাদের অনেক বেশি। কারণ আমরা গিয়ে তাদের হাতে-পায়ে ধরি, একটু কিছু বলার জন্য এবং আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য। এটি আসলে দেশবিরোধী এবং দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের শামিল।
সাংবাদিকদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আপনাদের মনে আছে যখন বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন করবে না বলে ঘোষণা দিয়েছিল তখন কিছু বড় পত্রিকা ব্যানার হেডিং দিয়েছিল ‘পদ্মা সেতু আর হচ্ছে না।’ কিন্তু বাংলাদেশে পদ্মা সেতু হয়েছে নিজেদের টাকায়।
এগুলোর ব্যাপারে সাংবাদিক বন্ধুদের সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকরা ভূমিকা রাখে, তাই গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গণমাধ্যম মানুষকে সঠিক তথ্য পেতে এবং সঠিক চিন্তা করার ক্ষেত্রে সহায়তা করে। একই সঙ্গে মানুষকে বিশ্ব পরিস্থিতি জানাতেও সহায়তা করে।