ফ্রিডম বাংলা নিউজ

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২১, ২০২৪ |

EN

জাহাঙ্গীরের মেয়র পদ ফিরে পাওয়ার রায় পেছাল

আদালত প্রতিবেদক | আপডেট: বৃহস্পতিবার, মার্চ ৩০, ২০২৩

জাহাঙ্গীরের মেয়র পদ ফিরে পাওয়ার রায় পেছাল
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে জারি করা রুলের ওপর রায় ঘোষণা পিছিয়েছে।  

রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর আগে, গত মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের শুনানি শেষ হয়। শুনানি শেষে একই বেঞ্চ রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।

ওইদিন আদালতে জাহাঙ্গীরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, অ্যাডভোকেট এম কে রহমান ও ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী। সিটি করপোরেশনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম।
 
এর আগে, গত ১৫ মার্চ মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের শুনানি শুরু হয়।

এদিকে গত ১২ মার্চ জাহাঙ্গীর আলমকে তার পদে পুনর্বহালের জন্য স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন ওই সিটির ৬২ জন কাউন্সিলর। ওই আবেদনে বলা হয়, ‘গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলগণ জানাচ্ছি যে, নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম নির্বাচিত কাউন্সিলর ও দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। কিন্তু বিগত ১৫ মাসে এ সিটিতে প্যানেল মেয়রের (কাউন্সিলর) স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতি ও সমন্বয়হীনতা বর্তমানে চরম সীমায় পৌঁছেছে। যার ফলস্বরূপ গাজীপুর সিটি করপোরেশন সম্পূর্ণরূপে অকার্যকর হয়ে পড়েছে।’
 
এর আগে গত বছরের ২৩ আগস্ট গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. আক্তারুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

রুলে স্থানীয় সরকার সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। ওই শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছিলেন, জাহাঙ্গীর আলমকে যেসব অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, সেগুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত এখনও চলমান। রিটের পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ জানিয়েছিলেন, যে অভিযোগে জাহাঙ্গীর আলমকে বরখাস্ত করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে আগেও একই অভিযোগ আনা হয়েছিল। তখন মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পায়নি।

গত বছরের ১৪ আগস্ট গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া জাহাঙ্গীর আলম পদ ফিরে পেতে হাইকোর্টে রিট করেন। রিটে তাকে সাময়িক বরখাস্তের আইনগত বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়। ব্যারিস্টার মশিউর রহমান সবুজ জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে এ রিট করেন।
 
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের নিয়ে কটাক্ষ করার অভিযোগে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার হওয়া জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
 
এ বিষয়ে ওই সময়ের স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, গাজীপুরের মেয়র পদ থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সেখানে একজনকে ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে বেশকিছু অভিযোগ এসেছে। আইন অনুযায়ী কোনো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ আসে এবং সে অভিযোগ তদন্তের জন্য বা নিষ্পত্তির জন্য আমলে নেয়া হয়, তাহলে আইন অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করার নিয়ম আছে। সে কারণে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে সম্প্রতি তাকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ক্ষমা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।