ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: রবিবার, আগস্ট ৮, ২০২১
১৯৭৫
সালের ১৫ অগাস্টে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে ঘুরিয়ে ইসলামী
প্রজাতন্ত্রে বা একটা কমিউনাল রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল খুনি চক্র। জিন্নাহর দ্বি-জাতি
তত্ত্বই বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিল চক্রান্তকারীরা।
জাতির
জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যাকাণ্ডে চক্রান্তকারীদের অন্যতম প্রণেতা খুনী
খন্দকার মোশতাকের স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশকে একটি ইসলামী প্রজাতন্ত্র দেশ হিসেবে গড়ে তোলা।
তবে তার সে স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়নি। ইসলামিক প্রজাতন্ত্র বাংলাদেশ গড়ে তোলার সে স্বপ্ন
রুখে দিয়েছিল ভারত। কলকাতার বিখ্যাত দ্য স্টেটসম্যান পত্রিকার সম্পাদক মানস ঘোষের বয়ানে
সে চাঞ্চল্যকর, বিস্ফোরক তথ্যই উন্মোচিত হয়েছে আমাদের সামনে।
২০১১
সালের ১৫ সেপ্টেম্বর কলকাতার দ্য স্টেটসম্যান-এর সম্পাদক মানস ঘোষের এক নিবন্ধে বলা
হয়, খন্দকার মোশতাক আহমেদের সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা ১৯৭৫ সালের একটি নাটকীয় পরিস্থিতির
বিবরণ দিয়েছেন। ১৫ আগস্টে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারত ও সোভিয়েত রাষ্ট্রদূত ঢাকায় ছিলেন
না। ভারতীয় হাইকমিশনার সমর সেন গাড়িতে চেপে কলকাতা হয়ে ১৫ আগস্টে ঢাকায় পৌঁছান। তিনি
হাইকমিশনে তাঁর সহকর্মী এবং ঢাকার ‘বন্ধুদের’ সঙ্গে অনেকগুলো বৈঠক সেরে ১৮ আগস্ট বঙ্গভবনে
যান। গাড়ি থেকে নেমে অপেক্ষ্মান আলোকচিত্রীদের সামনে তাঁকে সহাস্যে দেখা যায়। এটা উপস্থিত
কর্মকর্তাদের বিস্মিত করে। এরপর এক খণ্ড কাগজ হাতে সমর সেনকে সরাসরি ‘প্রেসিডেন্ট’
মোশতাকের সান্নিধ্যে দেখা যায়। মোশতাক দাঁড়ানো থাকতেই ভারতীয় হাইকমিশনার তাঁর কূটনৈতিক
নোট পড়ে শোনান। মোশতাক এরপর বিমর্ষ মুখে ধপ করে চেয়ারে বসে পড়েন। এতে লেখা ছিল:
যদি
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের নাম পরিবর্তন করা হয় এবং কোনো দেশের সঙ্গে কনফেডারেশন করা
হয়, তাহলে ভারতের কাছে থাকা বৈধ চুক্তির আওতায় ভারতের সেনাবাহিনী যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।
কিন্তু আপনি যদি নাম পরিবর্তন এবং তথাকথিত কনফেদারেশনের ধারণা থেকে বিরত থাকেন, তাহলে
ভারত ১৫ আগস্ট থেকে যা-ই ঘটুক না কেন, তাকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে বিবেচনা
করবে।