জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) অবস্থিত বাংলাদেশের একমাত্র ব্যতিক্রমধর্মী গুচ্ছ ভাস্কর্য "৭১-র-গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি" পূর্ণাঙ্গ করতে লাগবে ৩ কোটি টাকা লাগবে বলে জানিয়েছেন গুচ্ছ ভাস্কর্য প্রস্তুতকারক ভাস্কর রাসা।
প্রবেশমুখে নতুন ভবনের সামনে বিখ্যাত লাল সবুজ রঙে আবৃত ব্যতিক্রমধর্মী গুচ্ছ ভাস্কর্যের কথা বলতে গেলে যার নাম শুরুতেই বলতে হয় তিনি শিল্পী ভাস্কর রাসা যিনি অত্যন্ত সুনিপুণ হাতে ভাস্কর্যটি তৈরী করেছেন।
ভাস্কর রাসা বলেন, বিজয়ে ভাষ্কর্যটা পিতলের করতে চাই। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমন, ঘাতক ও বিজয় এই তিনটা ভাষ্কর্য সম্পন্ন করতে আমাদের প্রায় তিন কোটি টাকা লাগবে।
তিনি আরও বলেন, ভাস্কর্যটি সম্পন্ন করার ব্যাপারে আগের ভিসির কাছে গিয়েছিলাম। ভিসি স্যার বললেন এটা নতুন ক্যাম্পাসে করা লাগবে৷ আমরা বললাম এখন থেকে শুরু করলে ভাস্কর্য নতুন ক্যাম্পাসে তৈরী হতে প্রায় ৬বছর লাগবে। তারপরে প্রশাসন থেকে এবিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
মুক্তিযুদ্ধের সময় জগন্নাথ কলেজের ভেতরে সারিবদ্ধভাবে সাধারণ মানুষকে ধরে দাঁড় করিয়ে হত্যা করা হতো। এরপর এসব মৃতদেহের স্তূপ সাজিয়ে দেয়া হতো গনকবর। নির্মম এ হত্যাযজ্ঞের স্মারক হিসেবে গণকবরের ওপরে এ ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়। ভাস্কর্যের নিচে রয়েছে পানি, যা দিয়ে নদীমাতৃক বাংলাদেশকে বোঝানো হয়েছে। আর পানির ভেতরে রয়েছে বাংলা বর্ণমালা, যা দিয়ে ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে তুলে ধরা হয়েছে। এতে বোঝানো হয়েছে, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সফলতায় বাংলার মানুষের মধ্যে স্বাধীনতার ভাবনা আসে।
ভাস্কর্যটির নির্মাণ শুরু হয় ১৯৮৮ সালে যা শেষ হয় ১৯৯১ সালে। ২০০৮ সালের ৩১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম খান এটি উদ্বোধন করেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, 'দেশের একমাত্র ব্যতিক্রমধর্মী গুচ্ছ ভাস্কর্য জগন্নাথে অবস্থিত তাই গর্ব হয়। ভাস্কর রাসা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে পাঁচটি ভাগে প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন। আশাকরি প্রশাসনের সহায়তায় অতি দ্রুত এর নির্মাণ শেষ হবে।'