যুক্তরাষ্ট্রের দুটি যুদ্ধবিমান বাল্টিক সাগরে রুশ আকাশসীমায় প্রবেশ করার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ করেছে মস্কো। একটি সুখোই-৩৫এস যুদ্ধবিমান মার্কিন যুদ্ধবিমান দুটির এ চেষ্টা রুখে দিয়েছে বলে জানিয়েছে রাশিয়া।
সোমবার এ ঘটনা ঘটেছে বলে নিশ্চিত করেছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। খবর আলজাজিরার।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রুশ সুখোইয়ের তৎপরতায় রাশিয়ার সীমান্ত বরাবর উড়তে থাকা মার্কিন বি-৫২এইচ স্ট্র্যাটেজিক বোম্বার দুটি গতিপথ বদলে ফেলতে বাধ্য হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের রুশ দূতাবাসও টুইট করে একই তথ্য জানিয়েছে।
এর আগে গত সপ্তাহে কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার সুখোই-২৭ যুদ্ধবিমানের তৎপরতায় মার্কিন নজরদারি ড্রোন ভেঙে পড়ে। এ নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর এটাই ছিল রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম সরাসরি সামরিক বিরোধ। এ নিয়ে উত্তেজনা না কমতেই যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযোগ তুলল রাশিয়া।
রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম তাস জানিয়েছে, গত সোমবার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ন্যাশনাল ডিফেন্স কন্ট্রোল সেন্টারের রাডারে বাল্টিক সাগরে রাশিয়ার সীমান্ত বরাবর উড়তে থাকা মার্কিন আকাশযান দুটি শনাক্ত হয়। এ সময় মার্কিন যুদ্ধবিমানের দ্বারা রাষ্ট্রীয় সীমান্ত লঙ্ঘন প্রতিরোধ করতে দ্রুত সুখোই যুদ্ধবিমান পাঠানো হয়।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাতে রুশ সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, তাদের যুদ্ধবিমানটি আন্তর্জাতিক আকাশসীমা লঙ্ঘন করেনি। বিদেশি যুদ্ধবিমান দুটিকে তাড়িয়ে দিয়ে সেটি রুশ ঘাঁটিতে ফিরে আসে।
উল্লেখ্য, ১৪ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের এমকিউ-৯ রিপার নামের একটি ড্রোন কৃষ্ণসাগরে ভেঙে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রাশিয়ার একটি এসইউ-২৭ যুদ্ধবিমান ড্রোনটির ওপর জ্বালানি তেল ফেলে। পরবর্তীকালে সেটি আবার উড়ে এসে ড্রোনের প্রপেলারে আঘাত করে। এতে ড্রোনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে সেটি কৃষ্ণসাগরে বিধ্বস্ত করানো হয় বলে জানায় যুক্তরাষ্ট্র।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, ওই ড্রোন কৃষ্ণসাগরের আকাশসীমায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিল। ফলে সেটি নিচে পড়তে থাকে এবং সাগরে বিধ্বস্ত হয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার ব্যবহৃত আকাশসীমার বিধিনিষেধও লঙ্ঘন করেছিল সেটি।
তবে যুক্তরাষ্ট্র জানায়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে থেকেই নজরদারির কাজে কৃষ্ণসাগরের আকাশসীমায় এমকিউ-৯ রিপার ড্রোন দিয়ে অভিযান চালিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ড্রোনও একই অভিযানে ছিল। তবে দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, সেদিন রুশ যুদ্ধবিমানের ওই কর্মকাণ্ড ছিল ‘বেপরোয়া ও অপেশাদার’।