ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: রবিবার, আগস্ট ৮, ২০২১
জাতির
পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের
সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের
আদর্শ ও ত্যাগের দৃষ্টান্ত
যুগে যুগে বাঙালি নারীদের
জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে
বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার
(০৮ আগস্ট) বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে
শনিবার (০৭ আগস্ট) দেওয়া
এক বাণীতে এ কথা বলেন
প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব
যে আদর্শ ও দৃষ্টান্ত রেখে
গেছেন, তা যুগে যুগে
বাঙালি নারীদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস
হয়ে থাকবে।
তিনি
বলেন, দেশের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গমাতা জাতির
পিতার সঙ্গে একই স্বপ্ন দেখতেন।
এ দেশের মানুষ সুন্দর জীবন পাক, ভালোভাবে
বাঁচুক এই প্রত্যাশা নিয়েই
তিনি বাঙালির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সবসময় ছিলেন সজাগ এবং দূরদর্শী।
প্রধানমন্ত্রী
বলেন, একজন সাধারণ বাঙালি
নারীর মতো স্বামী-সংসার,
আত্মীয়-স্বজন নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও
বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম,
মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার পর
দেশ পুনর্গঠনে তিনি অনন্য ভূমিকা
রেখে গেছেন।
বঙ্গমাতা
ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকীতে এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে, ‘বঙ্গমাতা
সংকটে সংগ্রামে নির্ভীক সহযাত্রী` যথার্থ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন,
এতে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে
সর্বক্ষণের সহযোগী ও অনুপ্রেরণাদায়ী এই
মহীয়সী নারীর কর্মময় জীবনের প্রকৃত অর্থ প্রতিফলিত হয়েছে।
শেখ
হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের রাজনৈতিক
সাফল্যে বঙ্গমাতা উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। জাতির পিতা রাজনৈতিক কারণে
প্রায়ই কারাগারে বন্দি থাকতেন। এই দুঃসহ সময়ে
তিনি হিমালয়ের মতো অবিচল থেকে
একদিকে স্বামীর কারামুক্তিসহ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ
অবদান রাখেন, অন্যদিকে সংসার, সন্তানদের লালন-পালন, শিক্ষাদান,
বঙ্গবন্ধুকে প্রেরণা, শক্তি ও সাহস যুগিয়ে
স্বাধীনতা এবং মুক্তির সংগ্রামকে
সঠিক লক্ষ্যে নিয়ে যেতে গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করেছেন।
তিনি
বলেন, ৬ দফা ও
১১ দফার আন্দোলনে তিনি
(বঙ্গমাতা) বলিষ্ঠ অবদান রাখেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের
সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গৃহবন্দি থেকে
এবং পাকিস্তানে কারাবন্দি স্বামীর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে
গভীর অনিশ্চয়তা ও শঙ্কা সত্ত্বেও
তিনি সীমাহীন ধৈর্য, সাহস ও বিচক্ষণতার
সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন।
বাংলাদেশের
স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামের
ইতিহাসে তার অবদান চিরস্মরণীয়
হয়ে থাকবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা
বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে
তিনি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজে
আত্মনিয়োগ করেন। বিশেষ করে নির্যাতিত মা-বোনদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন এবং সামাজিকভাবে
তাদের প্রতিষ্ঠিত করার উদ্যোগ নেন।
দেশ ও জাতির জন্য
তার অপরিসীম ত্যাগ, সহযোগিতা ও বিচক্ষণতার কারণে
জাতি তাকে যথার্থই ‘বঙ্গমাতা’
উপাধিতে ভূষিত করেছে।
১৫
আগস্টের হত্যাকান্ডের নিন্দা জানিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, স্বাধীনতা ও দেশবিরোধী অপশক্তি
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে
জাতির পিতার সঙ্গে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকেও সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করে, যা জাতির
ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়
হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।
বঙ্গমাতা
ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে
গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক
সাফল্য কামনা করেন শেখ হাসিনা।
বঙ্গমাতার
জীবনী পড়ার আহ্বান জানিয়ে
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার জীবনী চর্চার
মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম দেশপ্রেমে
উদ্বুদ্ধ হবে। বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী
জীবন, বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও
স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক অজানা অধ্যায়
সম্পর্কে জানতে পারবে।
বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।