ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর প্রথমবারের মতো রাশিয়া সফর করলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সোমবার তিনি মস্কো পৌঁছান। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে তিন পথের দিশা দেবেন। যুদ্ধ বন্ধে আপস করা, যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া অথবা ভিন্ন কোনো পথ।
অনেক বিশ্লেষক বলছেন, আন্তর্জাতিক রাজনীতির গোলযোগপূর্ণ এমন সময় শি জিনপিংয়ের রাশিয়া সফর দেশটির প্রতি তাদের পূর্ণ সমর্থনেরই বহিঃপ্রকাশ।
শি’র রাশিয়া সফরের মূল কেন্দ্রবিন্দুও যে ইউক্রেন সংকট তা বেশ পরিষ্কার। কারণ এই যুদ্ধের সঙ্গে জড়িত রয়েছে চীনের ভূরাজনৈতিক সম্পর্ক।
যদি যুদ্ধে রাশিয়া পরাজিত হয় তাহলে কী করতে পারে চীন? তারা কি পিছিয়ে যাবে নাকি রুশ সেনাবাহিনীকে সামরিক সহায়তা দেবে? বেইজিং অবশ্য বরাবরই বলছে তারা 'নিরপেক্ষ'।
এ সফর নিয়ে নোবেলবিজয়ী রুশ সাংবাদিক মুরাতভ বলেন, পুতিন তার নিজস্ব ব্লক তৈরি করছেন। তিনি আর পশ্চিমাদের বিশ্বাস করেন না। কখনো করবেনও না। তিনি আরও বলেন, রাশিয়াকে চীনের পাশাপাশি ভারত, ল্যাটিন আমেরিকা এবং আফ্রিকার কিছু মিত্র দেশগুলোর একটি শক্তিশালী ব্লক সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছেন। এখানে তার উদ্দেশ্য হলো-একটি পশ্চিমাবিরোধী বিশ্ব গড়ে তোলা।
মুরাতভ মনে করেন, ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে এই পশ্চিমাবিরোধী বিশ্ব চীনের ওপর আগের চেয়ে অনেক বেশি নির্ভরশীল।
ওয়াশিংটনের কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের (একটি নির্দলীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক) সিনিয়র ফেলো আলেকজান্ডার গাবুয়েভ বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, পররাষ্ট্রনীতি এবং অর্থনৈতিক নীতির সাংগঠনিক নীতিতে পরিণত হয়েছে।
এক্ষেত্রে চীন রাশিয়াকে সরাসরি সামরিক সহায়তা না করলেও অন্তত অস্ত্রের উপাদান এবং বেসামরিক প্রযুক্তি সরবরাহ করে। যা রাশিয়া সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলা করতে এবং রুশ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য, রাশিয়া চীনের সঙ্গে প্রাথমিকভাবে জ্বালানি খাতে বাণিজ্য বাড়াচ্ছে। শি’র এই সফরে পুতিন রাশিয়ার তেল, গ্যাস এবং জ্বালানি পাইপলাইনের বিষয়গুলো আলোচ্যসূচিতে রাখবেন বলে আশা করা হচ্ছে।