যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল এমপি বলেছেন, মুক্তিকামী মানুষের মুক্তির মহান দূত ছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বাঙালি জাতির স্পর্ধিত সত্ত্বার প্রতিক। তিনি বাংলা আর বাঙালির বিশুদ্ধ আবেগ, যার সমগ্র অস্তিত্ব বাংলার মাটির সাথে নিবিড় বন্ধনে আবদ্ধ। জাতির প্রতিটি আপদকালীন সময়ে যিনি আমাদের মুক্তিদাতা। যিনি বাংলার মানুষের হৃদয়ের স্পন্দনকে মুক্তির সঞ্জিবনী মন্ত্রে গেঁথেছিলেন, বাংলা আর বাঙালির অধিকার আদায়ের প্রতিবাদ ও মিছিলের উষ্ণ সাহচর্যে বেড়ে উঠা ইতিহাসের আরাধ্য পুরুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তিনি আজ দুপুরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সভা কক্ষে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কর্তৃক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ছোটবেলা থেকেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপোষহীন ছিলেন। বিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়েই তাঁর মধ্যে দেশপ্রেম ও মানবিকতাবোধের গুনাবলী পরিলক্ষিত হয়েছিলো। এছাড়া শিশুকাল থেকেই তিনি শিশুদের নয়নমণি ছিলেন। তিনি সবসময় শিশুদের পাশে থাকতেন।
প্রতিমন্ত্রী আরে বলেন, ক্ষণজন্মা এই মহাপুরুষ শৈশব থেকেই ছিলেন অত্যন্ত মানবদরদি কিন্তু অধিকার আদায়ে আপসহীন। চল্লিশের দশকে এই তরুণ ছাত্রনেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী’র সংস্পর্শে এসে সক্রিয় রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। ১৯৪৮ সালে ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’, ’৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৫৮ এর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ’৬৬ এর ৬-দফা, ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০ এর নির্বাচনসহ বাঙালির মুক্তি ও অধিকার আদায়ে পরিচালিত প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দেন। এজন্য তাঁকে বহুবার কারাবরণ করতে হয়েছে। ৫৫ বছরের ছোটো জীবনে ১৪ বছরের বেশি সময় তিনি কারাগারে ছিলেন। সহ্য করেছেন অমানুষিক নির্যাতন। কিন্তু বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে তিনি কখনও শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে আপস করেননি।
বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বাঙালির আবেগ ও আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’’, যা ছিল মূলত স্বাধীনতার ডাক।
তিনি বলেন, ২৫শে মার্চ কালো রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অতর্কিতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ চালালে ২৬শে মার্চ ১৯৭১ জাতির পিতা ঘোষণা করেন বাঙালি জাতির বহুকাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ ন’মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। একটি ভাষণ কীভাবে গোটা জাতিকে জাগিয়ে তোলে, স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উৎসাহিত করে, বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ তার অনন্য উদাহরণ।
এ সময়ে প্রতিমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
এর আগে প্রতিমন্ত্রী যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর প্রাঙ্গনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
যুব ও ক্রীড়া সচিব ড. মহিউদ্দিন আহমেদ এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন দপ্তর সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।