পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান শুক্রবার লাহোর হাইকোর্টে হাজির হওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। খবর ডন, জিও টিভি ও আলজাজিরার।
ইসলামাবাদ সেশন কোর্টে হাজির হওয়ার নিশ্চয়তাও দেবেন তিনি। সেশন আদালত ইমরানের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে রেখেছেন এবং ১৮ মার্চে আদালতে তার হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন।
পিটিআই নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেছেন, ইমরান খান নিজে লাহোর হাইকোর্টে গিয়ে বিচারককে আশ্বস্ত করবেন যে, তিনি ইসলামাবাদের আদালতে যেতে প্রস্তুত। এ মর্মে একটি মুচলেকাও দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
পাকিস্তানের দৈনিক ‘ডন’ জানায়, লাহোর হাইকোর্টের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় চৌধুরী ইসলামাবাদ সেশন কোর্টে হাজির হতে পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানের নিরাপত্তার জন্য ‘নিরাপদ করিডোরের’ ব্যবস্থা করার দাবি জানান।
তিনি পরিষ্কার করে দিয়ে বলেন যে, ইমরান খানকে গ্রেফতার করাই তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আসল উদ্দেশ্য নয়, এ পরোয়ানা কেবল ইমরানকে আদালতে হাজির করার জন্য জারি হয়েছে।
তোষাখানা মামলার শুনানিতে দিনের পর দিন অনুপস্থিত থাকার কারণে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে ফেব্রুয়ারির শেষদিকে জামিন অযোগ্য গ্রফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন ইসলামাবাদের সেশন আদালত।
পরে পিটিআই এই পরোয়ানায় স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন করলে ১৩ মার্চ পর্যন্ত গ্রেফতারি পরোয়ানা স্থগিত করা হয়।
কিন্তু শুনানিতে অনুপস্থিত থাকার কারণে গত সোমবার ইমরান খানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয়বারের মতো জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ইসলামাবাদের অতিরিক্ত জেলা ও সেশন আদালতের বিচারক জাফর ইকবাল।
গ্রেফতারি পরোয়ানা বাতিল চেয়ে করা পিটিআইয়ের আবেদনও বৃহস্পতিবার নাকচ করেছেন সেশন আদালতের বিচারক।
পুলিশ একাধিকার ইমরান খানকে গ্রেফতারের চেষ্টা করে বিফল হয়েছে। ইমরানের শত শত সমর্থক তাকে গ্রেফতারে বাধা দিয়েছেন।
ইমরান খানকে গ্রেফতার করে ১৮ মার্চ আদালতে হাজির করতে আদালতের দেওয়া নির্দেশ মোতাবেক ইসলামাবাদ পুলিশের একটি দল গত মঙ্গলবার লাহোরে গিয়েছিল।
সেদিন ইমরান খানকে গ্রেফতার করতে তার জামান পার্কের বাড়ি ঘিরে পুলিশ অবস্থান নিলে গ্রেফতার ঠেকাতে রাস্তায় নেমে আসা পিটিআই নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বেধে যায়। বুধবারও সংঘাতের মধ্যেই চলে ইমরানকে গ্রেফতারের চেষ্টা।
পিটিআই কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ, পালটাপালটি কাঁদুনে গ্যাস ও পেট্রলবোমা ছোড়ার ঘটনার পর সেদিন সন্ধ্যায় পুলিশ পিছু হটে। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন।
তাছাড়া পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) খেলা থাকার জন্যও পুলিশি অভিযান স্থগিত রাখা হয়।