দুই কন্যা শিশুর অভিভাবকত্ব ও হেফাজত চেয়ে বাবা ইমরান শরীফের মামলা খারিজাদেশের বিরুদ্ধে করা আপিল তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। পাশাপাশি এই সময়ের মধ্যে মামলাটির ওপর স্থিতিবস্থা (স্ট্যাটাসকো) বজায় রাখতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ দুই শিশু এখন যেভাবে আছে সেভাবেই থাকবে।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন। আদেশ অনুযায়ী, জাপানি মা নাকানো এরিকো দুই শিশুকে নিয়ে আপাতত আর বিদেশে যেতে পারছেন না। আদালতে শিশুদের বাবার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আকতার ইমাম। অন্যদিকে মায়ের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আজমালুল হোসেন কেসি। এ সময় শুনানিতে আরও আদালতে উপস্থিত ছিলেন দুই শিশুর জাপানি মা এরিকো।
জাপানের নাগরিক এরিকো ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইমরানের ২০০৮ সালের ১১ জুলাই বিয়ে হয়। তাদের তিনটি মেয়েসন্তান আছে। ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে (বড় ও মেজ) নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। ছোট মেয়ে জাপানে আছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইমরানের কাছে থেকে দুই মেয়েকে ফিরে পেতে ঢাকায় এসে ২০২১ সালের আগস্টে হাইকোর্টে রিট করেন এরিকো।
অন্যদিকে ছোট মেয়েকে ফিরে পেতে পৃথক একটি রিট করেন ইমরান। এসব রিটে দেওয়া পৃথক আদেশের ধারাবাহিকতায় আপিল বিভাগ দুই শিশুর অভিভাবকত্ব ও হেফাজত প্রশ্ন আইনি জটিলতা নিরসনে তাদের বাবা ও মাকে পারিবারিক আদালতে মামলা করার নির্দেশ দেন। পরে শিশুদের বাবা বিষয়টি নিয়ে পারিবারিক আদালতে মামলা করেন।
গত ২৯ জানুয়ারি বাবা ইমরান শরীফের করা মামলা খারিজ করে রায় দেন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান। পরে ওই রায় চ্যালেঞ্জ করে ঢাকার জেলা জজ আদালতে আপিল করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের বেঞ্চ দুই শিশুর অভিভাবকত্ব ও হেফাজত প্রশ্নে স্থিতিবস্থা দেন। পাশাপাশি তিন মাসের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির আদেশ দেওয়া হয়।