ট্রেনের টিকিট সংগ্রহের পর বিশেষ কারণে কোনো যাত্রী তা ফেরত দিতেই পারেন। অনেক সময় যাত্রীদের তেমনটি করতে দেখাও যায়। এক্ষেত্রে স্টেশনে টিকিট কাউন্টারে গিয়ে টিকিট ফেরত দিতে হয়। কিন্তু এখন আর স্টেশনে যেতে হবে না। ঘরে বসে অনলাইন মাধ্যমে ট্রেনের টিকিট রিফান্ড করা যাবে। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি যেমন কমবে বাঁচবে সময়ও।
অনলাইনে ইস্যু করা আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট রিফান্ড করার প্রক্রিয়া চালু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বুধবার (১ মার্চ) থেকে রেলের নতুন এ পদ্ধতি চালু হয়েছে।
রেলওয়ের টিকিট বিক্রির সহায়ক প্রতিষ্ঠান ‘সহজ-সিনেসিস-ভিনসেন জেভি’ কর্তৃপক্ষ গতকাল মঙ্গলবার এসব তথ্য জানায়।
অনলাইনে যেভাবে ট্রেনের টিকিট রিফান্ড করা যাবে
যে অ্যাকাউন্ট থেকে ট্রেনের টিকিট কেনা হয়, সেই অ্যাকাউন্টে একটি পার্চেজ হিস্ট্রি থাকবে। পার্চেজ হিস্ট্রিতে দেখা যাবে ক্রেতা কতগুলো টিকিট কিনেছেন। সেই তালিকার ডান পাশে টিকিট বারে একটি নতুন বাটন যুক্ত হবে ‘ক্যান্সেল’ নামে। ওই ক্যান্সেল বাটনে চাপ দিলেই ক্রেতা দেখতে পারবেন, এখন টিকিট ফেরত দিলে কত টাকা ফেরত পাবেন। আজ (১ মার্চ) থেকে রেলে এ পদ্ধতি যুক্ত করা হবে।
কিন্তু টিকিট রিফান্ডের টাকা সঙ্গে সঙ্গেই পাওয়া যাবে না। এই টাকা পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৮ কার্যদিবসের মধ্যে ফেরত দেওয়া হবে।
টাকা ফেরত না পেলে সমস্যার বিবরণসহ
https://eticket.railway.gov.bd এই ঠিকানায় মেইলে একটি অভিযোগ করতে হবে। এই মেইলের উত্তর যাত্রীকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে পাঠানো হবে।
টিকিট রিফান্ড পলিসিতে বলা হয়েছে, যাত্রা শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগে টিকিট ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে, এসি ক্লাসের জন্য ৪০ টাকা, প্রথম শ্রেণির জন্য ৩০ টাকা এবং অন্য শ্রেণির জন্য ২৫ টাকা পরিষেবা চার্জ কাটা হবে।
এক্ষেত্রে ৪৮ ঘণ্টার কম এবং ২৪ ঘণ্টার বেশি হলে, ভাড়ার ২৫ শতাংশ কাটা হবে। এছাড়া ২৪ ঘণ্টার কম এবং ১২ ঘণ্টার বেশি হলে ভাড়ার ৫০ শতাংশ, ১২ ঘণ্টার কম এবং ৬ ঘণ্টার বেশি হলে ভাড়ার ৭৫ শতাংশ করা হবে। তবে ৬ ঘণ্টার কম সময়ের জন্য কোনো ফেরত দেওয়া হবে না। অনলাইনে টিকিট রিফান্ডের ক্ষেত্রে পরিষেবা চার্জ ফেরতযোগ্য হবে না।
‘টিকিট যার ভ্রমণ তার’ এই স্লোগানে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রেলভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, অনলাইনে ইস্যুকৃত আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট অনলাইনেই রিফান্ড করার প্রক্রিয়া চালু করা হলে যাত্রীকে স্টেশনে এসে টিকিট রিফান্ড করার বাধ্যবাধকতা থাকবে না। ফলে সাধারণ যাত্রীরা ঘরে বসেই টিকিট রিফান্ড করতে পারবেন। এতে যাত্রীদের সময় ও খরচ বহুলাংশে কমানো সম্ভব হবে।
এদিকে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদ প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বিদেশি কোনো নাগরিক ট্রেনে ভ্রমণ করতে চাইলে সেক্ষেত্রে দেখাতে হবে পাসপোর্ট। বুধবার (১ মার্চ) থেকে সারাদেশে এটি কার্যকর হলেও যাত্রীদের অনেকে এখনো জানেন না, কীভাবে নতুন পদ্ধতিতে অনলাইনে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করতে হলে এনআইডি বা জন্মনিবন্ধন দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। পরে সেটি নির্বাচন কমিশনের ডেটাবেজ থেকে যাচাই করা হবে। যাচাই সম্পন্ন হওয়ার পর যাত্রীরা টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন। তবে একজনের এনআইডি দিয়ে টিকিট সংগ্রহ করে অন্যজন ভ্রমণ করতে পারবেন না।