দুই ছেলের বিরুদ্ধে মামলার পর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ঝাড়লেন চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের সংসদ সদস্য ও তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমার মুখ খোলাবেন না। মুখ খুললে অসুবিধা হয়ে যাবে। আমি আপনাদের সঙ্গে আছি। আমাকে সাইজ করতে চেষ্টা করলে নিজেরাই সাইজ হয়ে যাবেন।’
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে ফটিকছড়িতে শাহসুফি সৈয়দ শফিউল বশর (ক.) মাইজভান্ডারীর খোশরোজ শরীফ উপলক্ষে আয়োজিত ওয়াজ ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
দুদকের মামলার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করে আদালতে রিট করার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি দুদকের বিরুদ্ধে রিট করবো। দুদকের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করবো, কারণ আমরা পরিষ্কার। আমি এবং আমার ছেলের জন্য মাইজভান্ডার দরবার শরীফকে কলঙ্কিত হতে দেবো না। দুদক মাজার ও তরিকতবিরোধী স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে।’
দুদক কর্মকর্তাদের উদ্দেশে নজিবুল বশর বলেন, ‘৩৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে টাকা জমা দিয়ে দিলে কি আর টাকা আত্মসাৎ থাকে? ওই প্রতিষ্ঠানে ৬৫ কোটি টাকা জমা হয়েছে, দুদক তা গোপন করেছে। দুদক নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীকে চেনে নাই।’
সরকারের সঙ্গে তার কোনো বিরোধ নেই উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি ১৪ দলীয় জোটে আছি এবং থাকবো। ওরা এখনো নজিবুল বশর কী তা চেনে নাই। আমার জন্য অনেক দেশ কথা বলবে। বিএনপিকে ঘরে ঢোকানো সম্ভব, নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীকে না। খবর আছে। আমি কখনো আমার এলাকায় ক্ষমতার অপব্যবহার করিনি। সরকার তো জানে, আমার অবস্থান কী রকম।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার সিট আমি ঠিক করি। অন্য কেউ ঠিক করে না। সরকারও জানে। কওমীর সঙ্গে সরকারের গন্ডগোল, আমি সরকারকে সহযোগিতা করেছি।’ আগামী নির্বাচনেও তিনি এ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হবেন জানিয়ে বলেন, ‘আমি ভেসে আসি নাই। মাইজভান্ডারের দিকে যারাই অসৎ উদ্দেশ্যে হাত দিয়েছে, তাদের হাত পুড়ে গেছে।’
সৈয়দ হাবিবুল বশর মাইজভান্ডারীর সভাপতিত্বে ওয়াজ ও দোয়া মাহফিলে আরও বক্তব্য রাখেন সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর ছেলে সৈয়দ মাহতাবুল বশর মাইজভান্ডারী ও সৈয়দ তৈয়বুল বশর মাইজভান্ডারী।
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোটের শরীক দল হিসেবে নৌকা প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন নিয়ে ফটিকছড়ি থেকে এমপি নির্বাচিত হন সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী।
রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীর দুই ছেলে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ তৈয়বুল বশর মাইজভান্ডারী ও সৈয়দ আফতাবুল বশর মাইজভান্ডারীসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ৩৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করে দুদক।