ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪ |

EN

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা-দিবস আজ

ফ্রিডমবাংলানিউজ ডেস্ক | আপডেট: মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারী ২১, ২০২৩

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা-দিবস আজ
একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষাভাষী মানুষের জন্য একটি বিশেষ দিন। ১৯৫২ সালের এ দিনে বাংলা ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন আবুল বরকত, আবদুল জব্বার, আবদুস সালামসহ নাম না জানা অনেকে। তাদের শ্রদ্ধা জানাতে ২১ ফেব্রুয়ারি ভোরে খালি পায়ে শহিদমিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে শুরু হয় দিনটি।

অমর একুশ ও প্রভাতফেরির গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি/ ছেলে হারা শত মায়ের অশ্রু, গড়ায়ে ফেব্রুয়ারি/ আমার সোনার দেশের, রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। প্রভাতফেরীর সময় বাজতে থাকে সাংবাদিক ও লেখক আবদুল গাফফার চৌধুরীর রচিত এই গানটি।

একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সহ সব বাংলা ভাষা ব্যবহারকারী জনগণের গৌরবোজ্জ্বল একটি দিন। এটি শহিদদিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষাদিবস হিসেবেও সুপরিচিত। বাঙালির ভাষা আন্দোলনের মর্মন্তুদ ও গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত একটি দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। ১৯৫২ সালের এ দিনে (৮ ফাল্গুন, ১৩৫৮, বৃহস্পতিবার) বাংলাকে পূর্ব পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশ গুলিবর্ষণ করে। এতে অনেক তরুণ শহিদ হন। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো রফিক, জব্বার, শফিউর, সালাম, বরকত সহ অনেকেই। এজন্য এ দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।

১৯৯৮ সালের ৯ জানুয়ারি রফিকুল ইসলাম নামের এক কানাডা প্রবাসী বাঙালি জাতিসংঘের তৎকালীন জেনারেল সেক্রেটারী কফি আনানকে একটি চিঠি লেখেন। সেই চিঠিতে রফিক ১৯৫২ সালে ভাষা শহীদদের অবদানের কথা উল্লেখ করে কফি আনানকে প্রস্তাব করেন ২১ ফেব্রুয়ারিকে ‘মাতৃভাষা-দিবস’ হিসেবে যেন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘ ঘোষণা দেয় প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা-দিবস পালন করা হবে। ২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে দিবসটি জাতিসংঘের সদস্যদেশসমূহে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয়ে আসছে। তবে ১৯৫২ সালের পর থেকে প্রতি বছর এ দিনটি জাতীয় শহিদ দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়ে আসছে।

বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনায় ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা এক মিনিটে প্রথমে রাষ্ট্রপতি এবং পরে একাদিক্রমে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষকবৃন্দ, ঢাকাস্থ বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন এবং সর্বস্তরের জনগণ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। এ সময় আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি গানের করুণ সুর বাজতে থাকে।

বাঙালি ছাড়া আর কোনো জাতি তার নিজের ভাষা প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করেনি, অকাতরে জীবন বিলিয়ে দেয়নি। একারণে বাঙালির এই মহান আত্মত্যাগকে গোটা বিশ্ব স্মরণ করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা-দিবস পালনের মাধ্যমে। ২১ ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতি ভাষা শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে আসেন শহিদমিনারে। দেশের সর্বস্তরের মানুষ খালি পায়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই ফুল হাতে হাজির হন শহিদমিনার প্রাঙ্গণে।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ২১ ফেব্রুয়ারি সরকারি ছুটির দিন হিসেবে ঘোষিত হয়। এ দিন শহিদদিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে রেডিও, টেলিভিশন এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বাংলা একাডেমি ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে ঢাকায় একুশে বইমেলার আয়োজন করে।