তুরস্ক-সিরিয়ায় শতাব্দীর ভয়াবহতম ভূতিকম্প আঘাত হানার দু’সপ্তাহ যেতে না যেতেই ওই অঞ্চলে আঘাত হেনেছে আরও দুটি ভূমিকম্প। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে আঘাত হানা প্রথম ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৪। এর কয়েক মিনিট পরেই আঘাত হানে ৫ দশমিক ৮ মাত্রার আরও একটি ভূকম্পন। এ ঘটনায় তুরস্কে অন্তত তিনজন নিহত এবং দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। ধসে পড়েছে আরও কয়েকটি ভবন।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে আঘাত হানা ৭ দশমিক ৮ ও ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভয়াবহ দুটি ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ৪৬ হাজার ছাড়িয়েছে। কেবল তুরস্কেই মারা গেছেন ৪১ হাজারের বেশি। সেই বিপর্যয় এখনো ভোলেনি মানুষ। এর মধ্যেই সোমবার রাতে ফের শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে ওই অঞ্চলে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বাসিন্দাদের মধ্যে।
ইউরোপীয় ভূমধ্যসাগরীয় ভূকম্প কেন্দ্রের (ইএমএসসি) তথ্যমতে, সোমবার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল তুরস্কের হাতায় প্রদেশে এবং কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে দুই কিলোমিটার গভীরে। স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৪ মিনিটে আঘাত হানা শক্তিশালী এ ভূকম্পন পার্শ্ববর্তী আন্তাকিয়া এবং ২০০ কিলোমিটার দূরে আদানায়ও অনুভূত হয়েছে।
এর কয়েক মিনিট পরে একই অঞ্চলে ফের আঘাত হানে ৫ দশমিক ৮ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প। তুরস্কের দুর্যোগ মোকাবিলা সংস্থা জানিয়েছে, এই ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল হাতায়ের সামানদাগ জেলায়।
তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, রাতের ভূমিকম্পটি তুরস্ক ছাড়াও সিরিয়া, জর্ডান, ইরাক, ইসরায়েল এবং মিশরেও অনুভূত হয়েছে।
তুর্কি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেয়মান সোয়লু বলেছেন, সবশেষ জোড়া ভূমিকম্পে তুরস্কে অন্তত তিনজন নিহত এবং ২০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন।
হাতায়ের মেয়র জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে শহরটিতে বেশ কয়েকটি ভবন ধসে পড়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেকে আটকা পড়েছেন।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা জানিয়েছে, আলেপ্পোয় ধসে পড়া ধ্বংসাবশেষের আঘাতে অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন।
তুরস্কের হাতায় প্রদেশটি ভূমধ্যসাগরের তীরে অবস্থিত। স্থানীয় দুর্যোগ সংস্থা সতর্ক করেছে, ভূমিকম্পের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৫০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। এ কারণে জনগণকে উপকূল থেকে দূরে থাকতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।