নামাজ ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রোকন। উম্মতে মোহাম্মদীর ওপর দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন আল্লাহ তায়ালা। নামাজের ব্যাপারে অবহেলা ও নামাজ আদায় না করা ভয়াবহ গোনাহের কাজ। আর এর কঠিন পরিণতি হলো- চিরদুঃখের ও কষ্টের জাহান্নাম।
নামাজে অবহেলাকারীদের বিষয়ে কোরআনে কারিমে বলা হয়েছে, কেয়ামতের দিন জাহান্নামীদের জিজ্ঞাসা করা হবে— ‘কেন তোমরা সাকার নামক জাহান্নামে এলে? তারা বলবে, আমরা তো নামাজি ছিলাম না এবং আমরা মিসকিনদের খাবার দিতাম না; বরং আমরা সমালোচনাকারীদের সঙ্গে সমালোচনায় নিমগ্ন থাকতাম। এমনকি আমরা প্রতিদান দিবসকে (কেয়ামত) অস্বীকার করতাম। আর এভাবেই হঠাৎ আমাদের মৃত্যু এসে গেল।’ (সুরা মুদ্দাসসির, আয়াত : ৩৮-৪৭)
নামাজে কেরাত পড়া ফরজ। ছোট তিন আয়াত অথবা ৩০ হরফ সম্বলিত বড় এক আয়াত পড়লে ফরজ আদায় হয়ে যাবে। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘কাজেই কোরআনের যতটুকু তোমাদের জন্যে সহজ, ততটুকু (নামাজে) আবৃত্তি কর। (সূরা মুযযাম্মিল-২০)
ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাতে সূরায়ে ফাতেহা এবং এর সাথে আরও একটি সূরা মিলানো ওয়াজিব। শেষ দুই রাকাতে শুধু সূরায়ে ফাতেহা পড়া সুন্নত। কেউ যদি নামাজের শেষ দুই রাকাতের কোনো রাকাতে সুরা ফাতিহা ছেড়ে দেয় বা সুরা ফাতিহার জায়গায় অন্য কোনো সুরা পড়ে তাহলে তার নামাজ হবে কিনা?
কেউ যদি ফরজ নামাজের শেষ দুই রাকাতে সূরায়ে ফাতেহা ছেড়ে দেয় বা সুরা ফাতেহার জায়গায় অন্য সূরা পড়ে নেয় তাহলে তার নামাজ হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে না এবং পুনরায় নামাজ পড়তে হবে না। কারণ ফরজের শেষ দুই রাকাতে সূরায়ে ফাতেহা পড়া সুন্নত। আর নামাজে সুন্নত ছেড়ে দিলে নামাজ ভেঙ্গে যায় না এবং একারণে সিজদায়ে সাহুও ওয়াজিব হয় না। তবে প্রথম দুই রাকাতে সুরা ফাতিহা ছেড়ে দিলে এর কারণে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে। -(আহসানুল ফাতাওয়া;৪/৫০ ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ;৭/৪১২)
তবে ইচ্ছাকৃতভাবে এমন করা সুন্নতের প্রতি অবহেলার নামান্তর। সুতরাং ইচ্ছাকৃতভাবে এমনটি করা যাবে না। হাদিস শরিফে এসেছে, আবূ কাতাদাহ্ রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জোহরের প্রথম দু’রাকাতে সূরা ফাতিহা ও দু’টি সূরা পড়তেন এবং শেষ দু’রাকাতে সূরা ফাতিহা পাঠ করতেন। (বুখারী ৭৪০)