বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, লঞ্চ টার্মিনালসহ জনসমাগমস্থলে ভিড়ের মধ্যে নিরীহ যাত্রী বা পথচারীদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে চক্রের সদস্যরা। গল্প জুড়ে দিয়ে আপ্যায়নের আমন্ত্রণ জানায়। যাত্রীদের দেওয়া হয় বিস্কুট, কলা, কেক, পানি, ডাব বা অন্যান্য খাবার। অনেকে শুরুতে না করলেও চক্রের সদস্যদের আন্তরিকতায় একপর্যায়ে খাদ্যদ্রব্যগুলো গ্রহণ না করে উপায় থাকে না।
খাবার ও পানীয়গুলো চেতনানাশক ওষুধ মেশানো অবস্থায় থাকে। ফলে যাত্রীরা সেগুলো গ্রহণ করলেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন। ঠিক তখনই তাদের মোবাইল, মানিব্যাগ, ল্যাপটপসহ সর্বস্ব লুটে নিয়ে কৌশলে কেটে পড়ে চক্রের সদস্যরা।
বুধবার চক্রটির আট সদস্যকে গ্রেফতারের খবর জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তেজগাঁও বিভাগ। গ্রেফতাররা হলেন- মো. মজিবুর রহমান, নাসির উদ্দিন, মো. হারুন অর রশিদ, জয়নাল, মো. কবির হোসেন, মো. হারিছ, মো. আরব আলী ও ইদ্রিস মুন্সি। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের চেতনানাশক ট্যাবলেট ও পানীয়, ঝাঁজালো পদার্থ মিশ্রিত ভ্যাসলিন উদ্ধার করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, ঢাকা মহানগরীর যানবাহনে এবং বিভিন্ন জনসমাগমস্থলে মলমপার্টি বা অজ্ঞানপার্টি চক্রের সদস্যরা কাজ করছিল। এদের দৌরাত্ম্য রোধ, সাধারণ যাত্রী ও পথচারীদের দুর্ভোগ লাঘবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে ডিবি নিয়মিত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার শ্যামলী শপিং সেন্টার ও শ্যামলী হল এলাকা থেকে চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়।
ডিবি তেজগাঁও বিভাগের ডিসি মো. গোলাম সবুর যুগান্তরকে বলেন, চক্রটির সদস্যরা সারা বছর এই কাজ করলেও ঈদ, পূজা, রোজাসহ অন্যান্য পার্বণকে সামনে রেখে তাদের তৎপরতা বেড়ে যায়। তারা আগেও ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। তাদের নামে মহানগরীর বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।