ফ্রিডম বাংলা নিউজ

শনিবার, নভেম্বর ২৩, ২০২৪ |

EN

১৫০ দেশে বিশ্ব হিজাব দিবস পালিত

ধর্মকথা ডেস্ক | আপডেট: বৃহস্পতিবার, ফেব্রুয়ারী ২, ২০২৩

১৫০ দেশে বিশ্ব হিজাব দিবস পালিত

ছবি: সংগৃহীত

মুসলিম নারীদের হিজাবের অধিকার প্রতিষ্ঠা, হিজাবের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব হ্রাস ও মুসলিম নারীদের ভেতর সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে হিজাব দিবস পালিত হয় হয়েছে। এবার বিশ্বের ১৫০টির বেশি দেশে পালিত হয়েছে দিবসটি। দি ওয়ার্ল্ড হিজাব ডে (ডাব্লিউএইচডি)-এর উদ্যোগে গতকাল বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) দিবসটির ১১তম বার্ষিকী উদযাপিত হয়।

‘প্রগতি, নিপীড়ন নয়’ প্রতিপাদ্য ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হ্যাশট্যাগ আনঅ্যাপোলোজেটিকহিজাবি (#UnapologeticHijabi) লিখে নিজের হিজাব পরা ছবি শেয়ার করছেন সবাই। 

আরবি ভাষায় হিজাবের শাব্দিক অর্থ, বিভাজন বা পর্দা। ইসলামী শরিয়ত অনুসারে মুসলিম নারীদের জন্য নির্দিষ্ট অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঢেকে রাখতে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। বিশ্বের অনেক দেশে নারীদের হিজাব পরা নিয়ে বাধা-বিপত্তি থাকলেও তা বহু নারীর জন্য আশা ও অগ্রগতির প্রতীক।

হিজাবভীতির বিরুদ্ধে সংহতি জানাতে ও হিজাবের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ তৈরি করতে প্রতিবছর ১ ফেব্রুয়ারি পালিত হয় বিশ্ব হিজাব দিবস। 

২০১৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ‘বিশ্ব হিজাব দিবস’ পালনের উদ্যোগ নেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা নাজমা খান। তখন থেকে সব ধর্মের নারীরা হিজাব পরে হিজাবের প্রতি সংহতি জানানোতে অংশ নেন। 

নাজমা খান মাত্র ১১ বছর বয়সে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। বর্তমানে তিনি নিউ ইয়র্কের ব্রঙ্কসে বসবাস করছেন। এখানে আসার পর থেকেই হিজাব পরা শুরু করেন তিনি। কিন্তু হিজাব পরার পর থেকে নানা ধরনের অসহিষ্ণু আচরণের মুখোমুখি হন। ব্রিটিশ টিভি চ্যানেল স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নাজমা খান বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের নারীরা হিজাবের কারণে নানা ধরনের নিপীড়ন ও বৈষম্যের শিকার হন। মা-বাবা আমাদের আমেরিকায় উন্নত শিক্ষা দিতে নিয়ে এসেছিলেন। আমি তাদের আশাহত করতে চাইনি।’

বিদেশে এসে নতুন জীবন শুরু করতে গিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি ও চ্যালেঞ্জের কথা জানান নাজমা খান। তিনি বলেন, ‘ছাত্ররা প্রায়ই আমাকে উপহাস করত এবং ঠাট্টা করে বিভিন্ন নামে ডাকত। এমনকি স্কুলের বাইরে বাচ্চারা আমার জন্য অপেক্ষা করত এবং আমার উদ্দেশে থুতু নিক্ষেপ করত। প্রায়ই তারা হিজাব খুলে ফেলার হুমকি দিত।’

৯/১১-এর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পর যুক্তরাষ্ট্রের অনেক মুসলিমের মতো নাজমা খানের জীবনও কঠিন হয়ে পড়ে। হিজাবের জন্য বিভিন্ন বর্ণবাদী কথাবার্তা ও স্লোগান তাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেয়। তিনি বলেন, ‘সেই সময় নিউ ইয়র্ক শহরের রাস্তায় আমাকে ধাওয়া করা হয়। বাহ্যিকভাবে একজন মুসলিম নারী হওয়ায় অনেকে আমাকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করে। তখন বাড়ি থেকে বের হতে আমার খুবই ভয় হতো। আমার মনে হয়েছিল বিষয়টি সহজ হবে; কিন্তু তা হয়নি।’

অতঃপর ২০১৩ সালে বিশ্বে হিজাব বিষয়ক সচেতনতা তৈরির উদ্দেশ্যে ফেসবুকে একটি পেজ চালু করেন। এখানে সবার হিজাবের অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলার সুযোগ তৈরি হয়। এক দিনের জন্য হলেও অমুসলিম বা অহিজাবি যেকোনো নারী হিজাব পরে হিজাবের প্রতি সংহতি জানানোর সুযোগ পায়। এক বছর পর ২০১৪ সালে ৪৪ মিলিয়ন মানুষের কাছে ফেসবুক পেইজের বার্তাটি পৌঁছে যায়। গত ১০ বছর হিজাব দিবসটি নিউ ইয়র্ক ও মিশিগান, যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্স ও ফিলিপাইনের প্রতিনিধি পরিষদসহ বিভিন্ন দেশ ও রাজ্যে স্বীকৃতি পায়। তা ছাড়া মেটার অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম পেজেও তা তালিকাভুক্ত হয়।

সূত্র: স্কাই নিউজ