চীনের জনসংখ্যা গত ৬০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো কমেছে। দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো এ তথ্য জানিয়েছে। জন্মহার কমে যাওয়া চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে কোণঠাসা করবে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের। অন্যদিকে ভারত ২০২৩ সালেই বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হয়ে উঠবে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ চীন। প্রায় ১৪০ কোটি জনসংখ্যার এই দেশে বর্তমান জন্মহার রেকর্ড পরিমাণ কম।
চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের শেষে দেশটির মোট জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪১ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজারে। যা ২০২১ সালের তুলনায় ৮ লাখ ৫০ হাজার কম। ২০২২ সালে দেশটিতে জন্ম নিয়েছে ৯০ লাখ ৫৬ হাজর শিশু। আর মারা গেছে ১ কোটি ৪১ হাজার মানুষ।
জনসংখ্যা কমার কারণে প্রতিনিয়ত কমছে কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যাও। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। তারা সতর্ক করে বলছেন, এমন পরিস্থিতি চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। এতে সরকারি কোষাগারের ওপরও চাপ তৈরি হবে।
সর্বশেষ চীনের জনসংখ্যা কমেছিল ১৯৬০ সালে। ওই বছর মাও সে তুংয়ের বিপর্যয়কর কৃষি নীতির কারণে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছিল দেশটি।
তবে এরপর দেশটিতে বাড়তে শুরু করে জনসংখ্যা। কিন্তু অধিক জনসংখ্যার ভয়ে ১৯৮০ সালে এক শিশু নীতি আরোপ করে চীন। যার কারণে জনসংখ্যা অনেক বেশি কমে যায়।
পরে ২০১৬ সালে সেই নীতি থেকে সরে আসে দেশটি। বর্তমানে অঞ্চলভেদে চীনে কোনো দম্পতি চাইলে তিন সন্তানও নিতে পারবেন। তবে এই পদক্ষেপ জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে খুব একটা প্রভাব ফেলেনি।
জীবনযাত্রার খরচ বৃদ্ধি, বেশিরভাগ নারীর কর্মক্ষেত্রে যাওয়া এবং উচ্চ শিক্ষার প্রতি ঝোঁক এ বিষয়গুলো জনসংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি ধীর করে দিয়েছে দেশটিতে। এরপর আবার করোনার কারণে সবার জীবন অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে। তখন সন্তান না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় অনেকে।
অস্ট্রেলিয়া ইউনিভার্সিটি অব ভিক্টোরিয়ার প্রফেসর শিউজান পেং বলেছেন, কয়েক দশক পুরনো নীতির কারণে ছোট পরিবারের সঙ্গেই বেশি অভ্যস্ত হয়ে গেছে চীনের সাধারণ মানুষ। তিনি সতর্ক করে বলেন, জন্মহার বাড়াতে কার্যকরী নীতি গ্রহণ করতে হবে চীন সরকারকে। না হলে জনসংখ্যা আরও কমবে।